রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ৫০ টাকা, ডায়াবেটিস চেক-আপ, প্রেসার মাপা ও ওজন মাপা প্যাকেজে ৪০ টাকা। তবে আলাদা আলাদাভাবে করলে ডায়াবেটিস চেক-আপ ৩০ টাকা, প্রেসার মাপা ১০ টাকা আর ওজন মাপতে মাত্র ২ টাকা নেন তিনি।
দিনে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন তার কাছে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। খরচ বাদ দিয়ে যা থাকে তাতে চলে যায় তার।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পুরনো ভবনের প্রধান ফটকে ছোট একটি টেবিল নিয়ে এভাবেই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন মো. নুরুন্নবী সুমন। আদালতে এ রকম দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী সেবা প্রদান করে থাকেন।
সুমন জানান, ঢাকার নিম্ন আদালতের বিচারক, আইনজীবী, আদালতের স্টাফ, বিচারপ্রার্থী মানুষ ও স্থানীয় কিছু লোকজনই মূলত তার কাছে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে থাকেন। বিচারকরা অনেক সময় নিজেদের একটু অসুস্থ মনে করলেই প্রাথমিকভাবে প্রেসার মাপাতে কিংবা ডায়াবেটিস চেক-আপ করাতে বিচারকের খাস কামরায়ও তার ডাক পড়ে।
প্রতিদিন সকাল সাতটায় শুরু হয় তার দিন। সকালে হাঁটতে আসা অনেক মানুষ তার কাছে প্রেসার মাপেন কিংবা ডায়াবেটিস চেক-আপ করান। বিকালে তারা অন্য কাজ করেন।
সুমন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ভাগ্যান্বেষণে বিদেশ পাড়ি জমান তিনি। তিন বছর আগে দেশে ফিরে এসে রেডক্রিসেন্ট থেকে ৬ মাসের একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেন তিনি। এরপর থেকেই এ পেশা বেছে নিয়েছেন।
সিলেট থেকে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলার কাজে এসেছেন সিলেট জৈন্তাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লোকমান। প্রচণ্ড গরমে ঘোরাঘুরি করে একটু ক্লান্ত তিনি। সুমনের সঙ্গে দরদাম ফয়সালা করে হাত বাড়িয়ে দেন ডায়াবেটিসের জন্য আঙ্গুল ছিদ্র করে রক্ত নিতে। মেশিনে তার ব্লাড সুগারের রিডিং দেখালো ৬.৫। এরপর তিনি প্রেসার মাপালেন, সেটিও নরমাল।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে লোকমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘টাকা ৪০টি গেলেও সবকিছু নরমাল আছে দেখে মনে তো প্রশান্তি পেলাম’।
এরপরই সুমনের কাছে সেবা নিলেন অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তারা গরিবের ডাক্তার। ছোট-খাটো সব বিষয় নিয়েই তো আর এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে যাওয়া যায় না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরান ঢাকার আদালতপাড়া ছাড়াও ভিক্টোরিয়া পার্ক, নয়াবাজার পার্ক, বলধা গার্ডেনসহ বিভিন্ন পার্কে এমন প্রায় ৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মী স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। সূত্র: বাংলানিউজ
সানবিডি/ঢাকা/এসএস