শিশু সামিউল আলম রাজন আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হচ্ছে আজ রোববার। সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনে সাক্ষ্য প্রদান করবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) সুরঞ্জিত তালুকদারসহ আরো দু’জন। সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালতে সৌদিআরব থেকে ফিরিয়ে আনা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ ১১ আসামিকে আদালতে আনা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রাজন হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ শেষ হয়ে গেলে চলতি মাসেই আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা সম্ভব বলে মনে করেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী। তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের মধ্যেই রাজন হত্যা মামলার রায় ঘোষণার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
এদিকে, এই হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামি কামরুলের ভাই শামীম আহমদ ও আইসক্রিম কারখানার কর্মচারী জাকির ওরফে পাভেল ওরফে রাজুকে ধরতে সাড়াঁশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। তাদের সন্ধানে শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন।
এছাড়াও সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল আহসানও জানিয়েছেন, পলাতক দুই আসামি দেশেই আত্মগোপনে আছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।
বাদিপক্ষের আইনজীবী ও সিলেট জেলা বারের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্যাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন জানান, রোববার মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ তারিখ। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আরেকটি তারিখে সাক্ষিদের ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হবে। আরেকটি তারিখ রায় ঘোষণার জন্য।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘সকল প্রক্রিয়া শেষে এ মাসেই মামলার রায় ঘোষণা করা হতে পারে। রাজন হত্যা মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামি ১৩ জন। এর মধ্যে কামরুলসহ এখন কারাগারে ১১ জন আটক রয়েছেন। মোট সাক্ষি ৩৮ জন। এর মধ্যে ইতোপূর্বে আদালতে ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজ বাকিদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর মামলার চার্জশিট আমলে নেন আদালত। ১ অক্টোবর থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এছাড়াও ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে গত ১৩ জুলাই রাতে প্রাবাসীরা আটক করে সেই দেশের পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
আটকের ৬৪ দিন পর তাকে গত বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ৫৭ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৪০ বিমানে কামরুলকে নিয়ে ঢাকা পৌঁছান তিন পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর রাত ১০টা ১ মিনিটে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয় সেই কামরুলকে। পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বাকি আসামিরা হলেন- কামরুলের ভাই গ্রেপ্তারকৃত মুহিদ আলম, আলী হায়দার, তাজ উদ্দিন আহমদ বাদল, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, দুলাল আহমদ, নগরীর জালালাবাদ থানার পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী। সূত্র: বাংলামেইল