স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল-এ পরিণত করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’- যা স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে অর্জিত হবে। সেসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়ন করছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।
ভাষাশহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের এদিনে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণোৎসর্গ করেছিলেন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালাম, রফিক, শফিউরসহ আরও অনেকে। আমি বাংলাসহ বিশ্বের সব ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি বলেন, পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব ভাষাসৈনিকদের, যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং সংগ্রামের বিনিময়ে আমাদের মা, মাটি ও মানুষের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।
বাণীতে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও ইতিহাস এবং ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব-বাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের জন্য নির্ধারিত ছিল। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী ওইদিন সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে এবং সেখানে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে কতগুলো তাজা প্রাণ নিমেষেই ঝরে পড়ে, অনেকে আহত হন, অনেকে গ্রেফতার হন। ২২ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালিত হয়।
মহান শহীদ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য- ‘বহুভাষায় শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা’- যা আমার বিবেচনায় অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
এএ