ইমরান বাহিনী , সংগীতা ইমামের বিশাল অংকের অর্থ জালিয়াতি নিয়ে আরও কিছু কথা বলার আগে , যারা আমায় ইনবক্সে সরকারের করনীয় নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তাঁদের উত্তরটা একটু দিতে চাই... হুম আমি বারবার বলেছি ছাত্রলীগ/ আওয়ামীলীগ অথবা বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ইমরান বাহিনীর আসল রূপ জানতে পেরে তাঁকে হুশিয়ারী দিয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু তখন ইমরান শুধু ইমরান নয়, সে ছিল কোটি মানুষের রাজাকার হটাও আন্দলনের প্রতিনিধি সেই সাথে অতিউৎসাহী মিডিয়া গুলোর হিরো।
একদিকে ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য ইমরান যে ভাবে জনগণের আবেগকে পুঁজি করে নানা সময় নানান কর্মসূচি দিয়ে মাঠ গরম রেখেছিল, সেটা শুধু তার একান্তই নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য করেছিল । সাধারণ মানুষ কিন্তু এসবের কিছুই জানতো না তাঁরা সত্যিকারের আন্দোলন করতে এসেছিল তাই কোটি কোটি মানুষ ও অন্ধের মতো তার কথায় চলছিল ।
এখানে সরকার ব্যক্তি ইমরানকে না কোটি মানুষের আবেগের সাথে ছিল বলেই গনজাগরণ মঞ্চের মাইক থেকে উচ্চারিত আহ্বান গুলোয় সারা দিয়ে সত্যিকারের আন্দোলনকারী জনতার সাথী হয়েছিল । মনে করে দেখুন সারা দেশে একসাথে জাতীয় পতাকা উত্তলনের আহ্বান অথবা মোমবাতি প্রজ্জলনের আহ্বান ইমরান এইচ এর মুখ থেকে উচ্চারন হলেও সে কিন্তু নিজে এই ওটা করার কথা চিন্তা করেনি , তাঁকে একদিন যারা মুখপাত্র পদে বসিয়েছিল তাঁরাই এইচ কে এই আহ্বান জানাতে বাধ্য করেছিল । আর সে কারনেই সবাই এমন কি সরকার প্রধান ও তখন জনগণের ভাবনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেই সব কর্মসূচি পালন করেছিল ।
আমি আবারও বলছি কিছু মানুষ আমাকে সরকার বিরোধী বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করে বিব্রত করতে চেয়েছেন, আমি তাঁদের উত্তরে বলছি ... আমি সরকার নই , আমি ও আপনার ই মতো জনগণ তবে পেশায় সাংবাদিক তাই বিবেক আর বুদ্ধি দিয়ে কাছে থেকে ঘটনা গুলো দেখেছি বলেই এসব লিখতে সাহস পাচ্ছি । আরেক টা কথা জানেন তো আমি একটু নির্ভীক টাইপ মানুষ সত্যি বলতে কাউকেই ভয় পাইনা আর সে ক্ষেত্রে কে ইমরান এইচ ওসব দেখার প্রয়োজন বোধ করেনি ।
অনেকে আবার প্রশ্ন করছেন এসব আগে কেনও বলি নি ? কেন আগে বললে কি করতেন আপনি ? মঞ্চে গিয়ে উল্টায় ফেলতেন ? নাকি আমি তখন এসব বললে আমার কথা কেউ বিশ্বাস করতেন বুকে হাত দিয়ে বলুন তো ? বরং কখনোই বিশ্বাস করতেন না এবং আমাকেই হয়তো জায়ামাতের / রাজাকারের বাচ্চা বলে আমার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করতেন , ঠিক কি না বলুন ? কেউ কেউ আবার লেখা বন্ধ করার হুমকি ও দিচ্ছেন। কেন সত্যি কথায় এত জ্বলে কেন? আপনারা আমার যা পারেন কইরেন এই সব আজাইরা হুমকি দিয়ে আমাকে থামাতে পারবেন না। তাই মানে মানে কেটে পড়ুন। আমি কিন্তু অত নরম না এরপর বেশী বাড়লে স্ক্রিন শট দিয়ে আপনাদের মেসেস পাব্লিক পোষ্ট দিব।
যাকগে যেটা বলছিলাম সবাই তো আর ইমরান ছিলেন না সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আপনাদের হৃদয়ে ছিল । ওটা নিয়ে ব্যবসা যারা করেছে তারাই কেবল পাপী । আপনি বা আমি কিন্তু নই । তাই আমি যা বলছি বিশ্বাস করতেই যে হবে তাও কিন্তু বলছিনা। তবে অবশ্যই নিজের বিবেককে একবার অন্তত প্রশ্ন করে দেখুন আপনি নিজে এসবের কিছু আন্দাজ করেছিলেন কি না ।
আপনি কি দেখেননি একটা সময় ওটা নাচ গানের আসরে পরিনত হয়েছিল । রাত হলেই উগ্র মেকআপের আড়ালে শরীরের অর্ধেক অংশ বের করা নোংরা নারীদের পদচারনা বেড়ে গিয়েছিল । রাত যতো গভীর হতো নষ্ট নারীদের ভীর ততো বাড়তে শুরু করতো , বলুন তো কোনটা খেয়াল করেন নি আপনি ? যে পবিত্র আন্দলনে আপনি আপনার মা বোন নিয়ে নির্ভয়ে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা পরে থাকতে দ্বিধা বোধ করেননি। সেই একই জায়গায় যখন পাপের পদচারনা বাড়ছিল তখন কি আমি বা আপনি নিজেই খুব শস্তি পেয়েছিলেন কখনো? এবার বলুন এটা কারা করেছে আপনি নাকি আমি? উত্তরটা আমি বলছি ঐ সব ধান্দা বাজ ইমরান গ্রুপ করেছিল এই সব কিছু ।
নাকি এখানেও কেউ বলবেন ওসব সরকার করেছিল । দেখুন সত্যি কিন্তু সত্যি এটা আগুনের মতো চেপে রাখা যায়না । কেউ বলেছেন সরকার নাকি মঞ্চকে মানে ইমরানকে ব্যবহার করেছিলেন, অন্য দলকে দমানর জন্য । তাহলে এবার বলুন এই আন্দোলনের আগেকে বা কারা প্রথম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এজেণ্ডা নিয়ে নির্বাচন করেছিল? সমগ্র মুসলিম বিশ্ব যখন এর বিরোধিতা করছিল তখন কারা আগে পদক্ষেপ নিয়েছিল ?
এমন কি বিশ্বের মাতাব্বর দেশ গুলো ও যখন চাচ্ছিল না নতুন করে বাংলাদেশে আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক, তবু তাঁদের কথা উপেক্ষা করে কেন আওয়ামীলীগ সরকার এতো বড় রিস্কে যেতে পা বাড়াল ? কারণ এটা হল ১৬ কোটি মানুষের প্রাণের দাবী । এটা বাংলার প্রতি ইঞ্চি জমির দাবী , ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মার দাবী, ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের দাবী । এতো গুলো দাবী এতো গুলো বছরে কারো চোখেই পড়লো নে কেনও সেটা কি একবের ভেবে দেখছেন না ? নাকি শুধু আওয়ামীলীগ পছন্দ করেন না বলে বলবেন আওয়ামীলীগের ১৪ গুষ্টি খারাপ । ওরা যা করে সব খারাপ । সত্যই তাই কি ?
আর আওয়ামীলীগ সরকার যখন ৫ ফেব্রুয়ারি দেখলো আদালতের এক বিচারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কোটি কোটি জনতা রাস্তায় বেড়িয়ে আসতে শুরু করলো আর সরকার ও তখন আমাদের পক্ষে দাঁড়ালো। আর আদালত স্বাধীন ছিল বলেই তাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল।
এর পর ও কি বলবেন সরকার কাউকে ব্যবহার করেছিলেন অন্য দলের বিরুদ্ধে ? আসলে তর্কের খাতিরে অনেক কিছুই বলা যায় কিন্তু বাস্তবতায় নয় । কেনও দেখতে পারেননি সরকার তখন জন সমর্থনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছিল এটা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কিত মাতাব্বর দেশ গুলোর মুখ বন্ধ করে দেওয়ার একটা উত্তম পদক্ষেপ ।
আমি এখনো বলছি আমি ঐ আন্দোলনের সাথে ছিলাম যতো দিন এদেশের মাটি থেকে ঐ সব কুলাঙ্গার এর ফাঁসি না হবে ততদিনই থাকবো , এবং আওয়ামীলীগ ও তাই থাকবে। কিন্তু আপনার আমার পবিত্র আন্দোলনকে যে বা যারা কুলশিত করেছে, সেই গুটি কয়েক কুকুরদের আমরা বহিস্কার চাই এই গণজাগরণ মঞ্চ থেকে । গণজাগরণ মঞ্চ ইমরান , বাঁধন বা আরিফদের মতো গুটি কয়েক মানুষ রুপি পশুদের জন্য নষ্ট হয়েছে । ওদের গ্রুপের কিছু ব্লগারদের জন্য এক সময় নাস্তিকতার আখড়া নামে পরিচিতি পেয়েছিল, সেটার জন্য ও কিন্তু আপনি বা আমি / আমরা দায়ী নই । ওটা শুধু ঐ এইচ গ্রুপের দায় ।
এর মাঝে সরকার পরে আবার ফেঁসে গেছে , আসলে আমাদের দেশের সরকারের ও কপাল বটে ...!! আমরা এতই ভালো মানুষ যে “আমার রাতে ঘুম আসছে না , তার কারণ আমি দিনে ঘুমিয়েছি ... কিন্তু না কারণ যা ই থাকুক এটা ও সরকারেরই দোষ । গতকাল একজন ট্যাক্সি ক্যাবের ভাড়া নিয়ে পোস্ট দিয়ে সরকারের কথা বলায় আমি লিখতে চেয়েছিলাম ...হ্যাঁ তাইতো ট্যাক্সি ড্রাইভার আপনাকে খুচরা নেই বলে ৭৫ টাকাই বেশী নিলো এটাও অবশ্যই সরকারের দোষ , কেন সরকার সকাল বেলা গিয়ে ঐ ট্যাক্সি ড্রাইভারকে খুচরা টাকার একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে আসলো না তাহলেই তো খুচরা টাকা থাকতো ।
আসলে এ হল আমাদের কারো কারো মানসিক অবস্থা। আমি বা আপনি যতো ক্ষন নিজেরা ঠিক না হবো ততদিন সব বিষয়ে সরকার কে টেনে আনবই । আর সরকার যারা পরিচালনা করেণ তারাও তো আমাদের নিয়েই বা আমাদের মতোই মানুষ।
তাই বলছি কেন আমরা আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন এনে সরকারে থাকা মানুষদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে বাধ্য করবো না বা করছি না ? দেখুন আপনি বা আমি যখন ঐ রাজাকার বিরোধী আন্দলনে মরিয়া ছিলাম সরকার ও তখন আমাদের সাথেই ছিল কিন্তু যখন আপনি আমি বা ঐ সব ধান্দাবাজদের কারণে আমাদের আন্দলনে ভাটা পরে গেলো সরকার ও তখন চুপ হয়ে গেলো ।
একবার ভাবুন তো ঐ এক কশাইকে ফাঁসিতে ঝুলাতে গিয়ে সরকারের কি পরিমান ভিনদেশী চাপ সইতে হয়েছিল ? বলুন তো সেই চাপ কি আমি বা আপনি কেউ ভোগ করেছি ? কতো ফোন কতো হুমকি ধমকি সব তো সরকারই সহ্য করেছে আপনি বা আমি নই তাই না ... কিন্তু ঐ একই কারণে মাতাব্বর দেশ গুলো যদি আমাদের সরকারের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও নষ্ট করে দেয় তাহলে সংগত কারনণই দেশের জনগণ অভাবে পরবে। আর সেই দায় ও কিন্তু সরকারকে ই নিতে হবে । তখন কিন্তু আপনি বা আমি সরকারকে ছেড়ে কথা বলবো না এটাই ই সত্যি । তাহলে প্রতি অক্ষরে অক্ষরে যেখানে সব কিছুতেই আমরা সরকারকে দোষারোপ করি , সেখানে সরকার কপাল আগায় টিপ নিতে চাইবে ক্যান ?
তাইতো দেখছি আমরা যখন আন্দোলন কে কলঙ্কিত করেছে বলে মঞ্চ ত্যাগ করেছি । অল্প কিছু ধান্দাবাজের নোংরামির কারণে মাঠ ছেড়ে ঘরে উঠেছি , ঠিক তার পর থেকে আজ অবধি সরকার ও ঐ ব্যাপার নিয়ে চুপ মেরেছে । আমি বারবার বলেছি জনগণ যা চাইবে সরকার শত কষ্ট হলেও সেটা ই করবে।
কারণ জনগণের সব যৌক্তিক দাবী পূরণ করতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । আর জনগণ যদি পাশেই না থাকেন তাহলে বলুন সরকারের ই বা কি এতো দায় যে আবারো ভিনদেশী রোষানলে পড়তে যাবে ?
তাই আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে করি সরকার কে দোষ দিয়ে নয় বরং সরকার কে সাথে নিয়েই আমাদের যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির কাজ টা তরান্বিত করা উচিত। সে জন্য প্রয়োজনে আবার রাস্তায় নামতে হলে নামবো । গনজাগরণ মঞ্চেই যাবো তবে তার আগে অবশ্যই ঐ সব ইমরান এইচ সরকার নামক বিষধর শাপ দের সমূলে উপ্রে ফেলে দিতে হবে ।
আজ একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে চলে যেতে হল সে জন্য দুঃখিত , আসলে এতো মানুষের এতো প্রশ্নের একসাথে উত্তর দিতেই আজকের লিখা ... পরের পর্বে আবার আগের রানা প্লাজার শেষ থেক
লিখবো ... ভালো থাকুন সবাই সব সময় ।