চার বছর আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত নেতাদের ভোজবাজির মতো রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে একজন সংসদ সদস্যের সাংগঠনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দেখে নেওয়ার হুমকিকে একসূত্রে গাঁথা বলে মনে করছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায় টিআইবি।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ব্যাপক আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ড ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ঘোষিত ‘শুদ্ধি অভিযানের’ পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত নেতা বিদেশে দীর্ঘদিন পলাতক থেকে চমকপ্রদ উপায়ে দেশে ফিরে দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিতে হকি ফেডারেশনে পুনর্বহাল হয়েছেন। একই সঙ্গে আরও একাধিক অভিযুক্ত নেতা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সুযোগ করে নিচ্ছেন, যা সরকারপ্রধান কর্তৃক দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ঘোষণাকে পদদলিত করার প্রকট দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন জোটের একজন সংসদ সদস্য দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করার কারণে দুদককে যে ভাষায় হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনই নয়, তাঁর কর্তৃত্বাধীন সাংগঠনিক সক্ষমতাকে পেশিশক্তি হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন উদহারণও। অথচ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি অভিযুক্তদের নির্দোষ প্রমাণ করার প্রয়াসের পথে হাঁটতে পারতেন।
এই পরিস্থিতিকে দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার এবং দুর্নীতি-প্রতিরোধক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের হাতে জিম্মি করার হীন প্রয়াস বলে মনে করছে টিআইবি। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকার ও ক্ষমতাসীন দল দেশবাসীকে কী বার্তা দিতে চাইছে?—যেকোনো অপরাধই করা হোক না কেন, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা থেকে পার পাওয়া যাবে! রাজনৈতিক অঙ্গনকে পেশিশক্তি ও দুর্বৃত্তায়নের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের এই অশুভ প্রক্রিয়াকে প্রতিহত করার দায়িত্ব সরকার ও ক্ষমতাসীন জোটকেই নিতে হবে।’
এএ