কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর খুনি শনাক্ত ও তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সারাদেশে আধাবেলা হরতাল পালন করছে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। হরতালের শুরুতে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর শাহবাগ সড়ক অবরোধ করেছে ওই সংগঠনের নেতারা। এতে শাহবাগ অভিমুখী বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (পেট্রোল) এস.এম. ইমানুল ইসলাম জানান, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমর্থনে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিনে শাহবাগে অবস্থান নেয়। তাদের অবরোধের কারণে শাহবাগ অভিমুখী চারটি রাস্তার কোনো দিকেই যান চলাচল করতে পারছে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তনু হত্যার বিচার দাবিতে প্লেকার্ড, পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন অবরোধকারীরা। একইসঙ্গে হরতালের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দিচ্ছেন তারা।
এর আগে গত ২০ মার্চ তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর ওই হত্যার বিচার দাবিতে ২৭ মার্চ কুমিল্লা অভিমুখে রোডমার্চ করে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। ২৯ মার্চ শাহবাগ সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এরপর গত ৩ এপ্রিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হয়।
প্রসঙ্গত, তনুর বাবার ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের একজন অফিস সহায়ক। পরিবারের সঙ্গে সেনানিবাসেই থাকতেন তনু। গত ২০ মার্চ রাতে বাসার কাছেই একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। পরে তার বাবা ইয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শুরুতে মামলাটি তদন্ত করেন কোতয়ালী মডেল থানার ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই. সাইফুল ইসলাম। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য গত ২৫ মার্চ রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।
তনুর হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে কুমিল্লায় অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে তার সহপাঠীরা। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তনুর হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে দেশের মানুষ।
ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত না পাওয়ায় এর সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে গত ৭ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ে করে কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওই কর্মসূচি থেকেই ২৫ এপ্রিল অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দেয় প্রগতিশীল ছাত্র জোট এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য। এক মাসের বেশি সময় পার হলেও তনুর হত্যাকারীদের এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস