পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৩-০৩-০৭ ১৬:৫৫:৪৮
পুঁজিবাজারে পুরুষদের তুলনায় নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা এখনও সীমিত। তবে বিএসইসি’র নানা উৎসাহমূলক উদ্যোগে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নারী বিনিয়োগকারীদের আর্থিক জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিয়মিতভাবে নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে। দেশের বিভিন্ন জেলাতে বিএসইসি কর্তৃক আয়োজিত বিনিয়োগ শিক্ষা কর্মসূচিতে নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সেশনের আয়োজন থাকে। সেখানে সমাজে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন নারীগণ তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার অভিজ্ঞতা বিনিময় করে থাকেন এবং অন্য নারীদেরও উৎসাহ প্রদান করেন কিভাবে পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সফলতা লাভ করা যায়।
বর্তমানে ঘরে বসেই অলনাইনে পছন্দের ব্রোকার হাউসের সাথে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। ডিএসই মোবাইল অ্যাপে যুক্ত বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারেন। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ সেবা নিশ্চিতে দেশ এবং বিদেশে ডিজিটাল বুথ স্থাপনে উৎসাহ প্রদান করছে বিএসইসি। প্রতিটি বুথে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশনা রয়েছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে বর্তমান পুঁজিবাজার সম্পূর্ণ রূপে নারীবান্ধব।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিজ প্রতিষ্ঠানসহ স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিভিন্ন আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে বিএসইসির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহিলা কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. রুমানা ইসলাম, যা বিএসইসি-তে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী বর্তমানে বিএসইসি-তে কর্মরত আছেন। বর্তমানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদে নারী পরিচালক রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ব্রোকার হাউস, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি-সহ বিভিন্ন বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
২০১৫ সালে জাতিসংঘে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে মোট ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয় যার অন্যতম লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়ন। দেশের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের কোন বিকল্প নেই। কোনো দেশের বিনিয়োগ সক্ষমতার অন্যতম মাপকাঠি হলো সঞ্চয়-জিডিপি অনুপাত। ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে অন্যূন ৩০ শতাংশ অনুপাতে সঞ্চয়-জিডিপি অর্জন করে এসেছে, যার মূল রূপকার এদেশের নারীসমাজ। যে দেশের সঞ্চয়-জিডিপি অনুপাত যত বেশি, সে দেশের বিনিয়োগ সক্ষমতাও শক্তিশালী। ঐতিহাসিকভাবে এদেশের নারীরা ধৈর্যশীল ও বাস্তবতাবাদী, যা পুঁজিবাজারে প্রকৃত বিনিয়োগকারীর মূল বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। বিএসইসি বিশ্বাস করে নারী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে কেবল লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না, পাশাপাশি একটি অধিকতর সুসংহত, স্থিতিশীল ও দক্ষ পুঁজিবাজার অর্জিত হবে। এতদ্লক্ষ্যে বিএসইসি নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান, নীতি সহায়তা প্রদান ও নারীবান্ধব পুঁজিবাজার প্রতিবেশ সৃষ্টিতে অব্যাহত সহায়তা প্রদানে বদ্ধ পরিকর।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম
নির্বাহী পরিচালক
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)
এএ