আজ ক্রিকেট বিশ্বে যেই লাল-সবুজ রূপটা আপনি দেখতে পাচ্ছেন তার অন্যতম রূপকার তিনি। তিনি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সূতিকাগার। যে কয়জনের হাত ধরে আগমন বাংলার ক্রিকেটের নতুন দিনের, উদয়ন নতুন সূর্যের তার অন্যতম তিনি। হারতে হারতে যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা, তখনই ত্রাতার ভূমিকায় নতুন উদ্যম নিয়ে পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। বলছিলাম বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাইলেন্ট কিলার খ্যাত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কথা।
ছোট বেলা থেকে যাদের ভালবেসে বড় হয়েছি তাদেরই একজন মাহমুদউল্লাহ। ছোট বেলার সেই হিরোটা সময়ের সাথে সাথে তাদের চোখে কখন যে হারিয়ে গেল কিছু বুঝতেই পারলাম না।
ইন্ডিয়ার বিপক্ষে গত সিরিজে ২০,৭৭,১৪। এর মধ্যে একটা ছিল খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে উইনিং নক। ১১ বিশ্বকাপে শফিউলকে নিয়ে ইংলিশদের হারানো সেই ম্যাচটা, অথবা অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬১ বলে ৬৪ রানের সেই ইনিংসটা আবার ১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে প্রায় একার কৃতিত্বে ওডিয়াই সিরিজ হারানো এবং প্লেয়ার অব দ্যা সিরিজ হওয়া। ১৫ সালের ফ্লাইং কিসটা আজও মনে পড়ে যে ফ্লাইং কিসে চড়েই আমরা প্রথম বারের মত উঠেছিলাম বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে।
১৭ সালেও আমাদের টেনে তুলেছিল বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টের স্বপ্নের সেমি ফাইনালে, আমার চোখে ১৫ বিশ্বকাপ এর ৩৩ বলে ৪৬ রানের ইনিংস টাও খারাপ ছিলনা কিংবা অষ্ট্রেলিয়ার সাথে ৫০ রানের ৬৯ বুক চিতিয়ে লড়াই করা ইংনিংসটা।এ সবকিছু না হয় বাদই দিলাম অন্তত শেষ দুইটা সিরিজের বিবেচনায়ও তো দলে সুযোগ পাওয়ার মত ছিল।
রিয়াদের ওভারঅল ক্যারিয়ার টাও তো একেবারেই খারাপ না ১৯০ ইনিংস ব্যাট করে ৩৫.৬০ গড়ে করেছে ৪৯৪৮ রান, সেঞ্চুরি সংখ্যা বৈশ্বিক আসরের ওই তিনটাই। রিয়াদ টপ অর্ডারে ব্যাট করে সাফল্য পেলেও দলের জন্য সবসময় করে গেছেন ত্যাগ (সেক্রিফাইস)। লোয়ার অর্ডারে করে প্রায় ৫০০০ ওডিয়াই রান করাকে আপনি খারাপ চোখে কিভাবে দেখবেন !!
যখন রিয়াদ দল থেকে আউটের নিউজটা দেখলাম তখন ইতিহাস তৈরির জয়ের আনন্দ ভুলে এক প্রকার কাঁদো কাঁদো অবস্থা চলে গিয়েছিলাম।ভাবলাম ছোট বেলা থেকে যাদের সাথে মিশে বড় হয়েছি তাদের একজন কে মনে হয় হারালাম
দিন শেষ রিয়াদের কাছে একটাই চাওয়া বুড়ো হাড় গুলো নতুন ভাবে শক্ত করে ফিরে আসো আপন মহিমায়। বিশ্বকাপের মত বড় আসরে তোমার মতো সিনিয়র ক্যাম্পেইনার খুবই দরকার।
ইশতিয়াক হাসান
গণমাধ্যমকর্মী
এএ