ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের মধ্যে রাশিয়া থেকে চীনের অ্যালুমিনিয়াম আমদানি চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে তিন গুণের বেশি বেড়েছে। মূলত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে এশিয়াকে বিকল্প বাজার হিসেবে বেছে নিয়েছে রাশিয়া। এতে চীনে বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া স্বল্পমূল্যের জন্য চীনের ক্রেতাদের কাছেও রুশ অ্যালুমিনিয়ামের কদর বাড়ছে। চীনের শুল্ক বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ অ্যালুমিনিয়াম ক্রেতা চীন। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দেশটি রাশিয়া থেকে মোট আমদানি করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৩০০ টন। গত বছরের একই সময় আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ২৮ হাজার ৭৫৯ টন। দুই মাসে ধাতুটি আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
অন্যদিকে বিশ্বের অ্যালুমিনিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ রাশিয়া। বর্তমানে দেশটির প্রধান অ্যালুমিনিয়াম ক্রেতা হয়ে উঠেছে চীন। শুল্ক বিভাগের তথ্যমতে, গত বছর চীন সব মিলিয়ে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৯৯২ টন প্রাইমারি অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকেই আমদানি করা হয় ৬৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, চীনে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি উৎপাদনে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অ্যালুমিনিয়ামের চাহিদা। এক্ষেত্রে রাশিয়ান অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানি রুসাল চীনে লো-কার্বন অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
গত বছরের শেষ দিকে চীন জিরো কভিড নীতি প্রত্যাহারের পর দেশটির নির্মাণ ও পরিবহন খাতে অ্যালুমিনিয়ামে কদর বেড়েছে। এক্ষেত্রে বেইজিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে রাশিয়া।
রাশিয়া থেকে আমদানি অ্যালুমিনিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম জাত পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ১০ মার্চ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। বাইডেন প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত কার্যত রুশ ধাতব পণ্যের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। ইউক্রেনে হামলার এক বছর উপলক্ষে দেশটির ওপর আরো এক দফা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে রাশিয়ায় উৎপাদিত প্রাইমারি অ্যালুমিনিয়াম অন্য দেশ থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব যাতে স্থানীয় শিল্প খাতে না পড়ে, সে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।
ট্রেড ডাটা মনিটরের বিশ্লেষকরা জানান, শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রে নিকেল ও প্যালাডিয়ামসহ প্রধান প্রধান ধাতব পণ্য রফতানি বন্ধ করে দিতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের খাতসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, রাশিয়া থেকে ধাতব পণ্য আমদানি কমেছে। ফলে এ শুল্ক দেশীয় শিল্পের জন্য কোনো নেতিবাচক প্রভাব বয়ে আনবে না।
এনজে