পবিত্র রমজান মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করালে আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে তার প্রতিদান দেন। রোজাদারের আমল থেকে নয়। অন্যকে ইফতার করালে রোজাদারের কোনো নেকি কমানো হবে না। এটা বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ।
রমজানে রোজাদারকে ইফতার করানো হলো মুমিনের বিশেষ আমল। এ বিশেষ আমলের বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। এ ছাড়াও রয়েছে অনেক সাওয়াব ও ফজিলত। অন্য রোজাদারকে ইফতার করানো প্রসঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওয়াব বৃদ্ধির আমল এবং গুনাহ মাফের আমল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এসেছে-
১. হজরত যায়েদ ইবনে জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করালো, তারও রোজাদারের ন্যায় সওয়াব হবে; তবে রোজাদারের সওয়াব বা নেকি বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)
২. অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে রোজাদারকে ইফতার করালো, তাকে পানাহার করালো, তাকেও রোজাদারের সমান সওয়াব দেওয়া হবে; তবে তার (রোজাদারের) নেকি বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। (তাবরানি, মুসান্নেফে আব্দুর রাজ্জাক)
ইফতারের জন্য কেউ কাউকে দাওয়াত করলে করণীয় কী এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি দাওয়াত গ্রহণের বর্ণনা তাঁর নিজ ভাষায় তুলে ধরা হলো-
৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তাঁকে এক নারী ইফতারের জন্য দাওয়াত করল, তিনি তাতে সাড়া দিলেন এবং বললেন, ‘আমি তোমাকে (মহিলাকে) বলছি, যে গৃহবাসী কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তাদের জন্য তার অনুরূপ সাওয়াব হবে। নারী বলল, ‘আমি চাই আপনি ইফতারের জন্য আমার কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন, বা এ জাতীয় কিছু বলেছে। তিনি বললেন, ‘আমি চাই এ নেকি আমার পরিবার অর্জন করুক। (মুসান্নেফে ইবনে আব্দুর রাজ্জাক)
আল্লাহ তাআলা অসীম অনুগ্রহ হলো- রোজাদারকে ইফতার করানো ঘোষণাও কল্যাণের আহ্বান। তিনি বান্দার জন্য কল্যাণে ভিন্ন ক্ষেত্র তৈরি করেছেন। যেমন তিনি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করার আহ্বান জানিয়ে সওয়াবের ঘোষণা দিয়েছেন।
তাই ইফতারের দাওয়াত পেলে তা গ্রহণ করা বৈধ ও কল্যাণের কাজ। কোনো অজুহাতে বা নেকি কমে যাওয়ার আশংকায় ইফতারের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করা ঠিক নয়।
গরিবদের দান করা
আবার গরিব রোজাদারকে ইফতারের জন্য আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করে, তাতে সে ওই টাকায় ইফতারও করল; আবার কিছু বাচিয়ে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হালো; এটাও ইফতার করানোর অন্তর্ভূক্ত হবে। আর গরীব ব্যক্তিও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর রোজাদারদেরকে পারস্পরিক দাওয়াত ও সদাচরণ বিনিময়ের তাওফিক দান করুন। অস্বচ্ছল, গরীব-দুঃখীর মাঝে ইফতার ও ইফতার করার জন্য অর্থ দান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এনজে