একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফাঁসি কার্যকরের সময় সেখানে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন ইকবাল হাসান, জেলা প্রশাসক মো. সালাহ উদ্দিন, সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধা, পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মফিজ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির, জেলার নেছার আলম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মঞ্চের পাশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একজন প্রতিনিধি ও র্যাবের একজন প্রতিনিধি। ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও দুজন ডেপুটি জেলার।
যেভাবে গ্রেফতার
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর (প্রধান নেতা) মতিউর রহমান নিজামীকে ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাতেও গ্রেফতার দেখানো হয়।
বিচার শুরু
২০১২ সালের ২৮ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু করে।
ট্রাইবুনালের রায়
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
আপিল বিভাগের রায়
ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারিতে আপিলেও ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
রিভিউ আবেদনের রায়
চলতি বছরের ২৯ মার্চ নিজামী আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেনার আবেদন করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং উচ্চ আদালতে দেওয়া ফাঁসির দণ্ড গত ৫ মে রিভিউয়েও বহাল থাকে।
রায় কার্যকর
বিচার প্রক্রিয়ার সকল ধাপ শেষে একজন ফাঁসির আসামির সর্বশেষ সুযোগ থাকে রাষ্ট্রপতির কাছে জীবন ভিক্ষা চাওয়ার। কিন্তু, মতিউর রহমান নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান নি। এরপর রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে।