তানজিন তিশা। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী। ২০১২ সালে অমিতাভ রেজার নির্মিত রবির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় এবং উপস্থাপনায়ও পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা। অভিনয়ের জন্য মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারের সেরা নবাগতা ২০১৫ বিজয়ী হন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পেয়েছেন দারুণ সফলতা। হালের এই আলোচিত মডেল এবং অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সৈয়দ ঋয়াদ
মিডিয়াতে কাজ করছেন কবে থেকে?
ওভাবে নিয়ম করে কাজ করা হয়নি। তবে প্রথমে ২০১১ সাল থেকে শখের বসে টুকটাক ফটোশ্যুট করতাম। তারপর শিল্পী ইমরানের ‘তুমি’ অ্যালবামের ‘শেষ সূচনা’ শিরোনামের গানটিতে ইমরানের সঙ্গে মডেল হিসেবে কাজ করেছি। এই ভিডিওটি ইউটিউবে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময় অমিতাভ রেজা ভাইয়ের রবির বিজ্ঞাপনের জন্য আমাকে নেওয়া হলো, এই বিজ্ঞাপনটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। এই বিজ্ঞাপনের পর থেকে মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করে। এভাবেই শুরু হয়ে গেল।
ছোটবেলা থেকেই কি ভেবেছেন মিডিয়াতে কাজ করবেন?
আসলে ছোটবেলা থেকেই নাচ করতাম। আমার বয়স যখন চার-পাঁচ তখন থেকেই ওস্তাদ রেখে বাসায় নাচের তালিম নিতাম। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পড়ালেখার চাপে সেটা আর করা হয়নি। এক সময় নাচ শেখাটা বন্ধ হয়ে গেল। বড় হয়ে নিজের মধ্যে অভিনয় করার ইচ্ছাটা শুরু হলো। তারপর থেকেই শখের বসে নাচ ও মডেলিং শুরু করা।
ছোটবেলায় কি হওয়ার ইচ্ছে হতো?
ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ব্যারিস্টার হব। আমার বাবার খুব ইচ্ছে আমি বড় হয়ে ডাক্তার হই। কিন্তু সেটি কেবল স্বপ্নই থেকে গেছে। তবে অভিনয়ের প্রতি প্রবল না হলেও একটা দুর্বলতা কাজ করত। নিজেকে টেলিভিশনে দেখতে পাব এমন ভাবনাও হতো। এক সময় মনে হতো অভিনেত্রী হলেই ভালো করব এমন কিছু চিন্তাও ছিল।
এ পর্যন্ত নিজের পাওয়া সেরা মুহূর্ত?
মেরিল প্রথম আলো অ্যাওয়ার্ড। এটা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। দেশের গুণীজনদের এখানে সম্মান জানানো হয়। আর আমার মনে হয় বেসরকারিভাবে এটি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় অ্যাওয়ার্ড। পুরস্কার বিজয়ী যে কারও জন্যই অনেক প্রেস্টিজাস। অনুভূতিটা অনেক ভালো ছিল । কারণ আমি এটা পাব এমনটা ভাবিনি। আর এটাও ভাবিনি আমি এই পুরস্কারের যোগ্য কি না। তবে যখন আমার নাম ঘোষণা করা হলো আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে পারিনি। আমাকে বিচারক ও দর্শকরা যোগ্য মনে করেছেন, এটাই আমার কাছে বড় বিষয়।
অভিনয় ও মডেলিং, কোনটি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
আমার ভালো লাগা বা ভালোবাসার জায়গা যদি বলি সেটি নাচ। তারপর মডেলিংতো অবশ্যই ভালো লাগে। আর এখন অভিনয় করছি, সেটিও বেশ উপভোগ করছি। সত্যি কথা বলতে কি সবই আমার ভালো লাগে। একেবারে আলাদা করে বলাটা মুশকিল। প্রতিটি ভালো লাগারই ভিন্ন ভিন্ন অর্থ আছে । আর প্রতিটি বিষয় ভালো লাগার কারণও ভিন্ন ভিন্ন হয়। আমি প্রতিটি জায়গাতেই নিজেকে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে চাই। যেহেতু অভিনয় শুরু করেছি পুরোদমে তাই অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত থাকতে স¦াচ্ছন্দ্যবোধ করব। আর সামনে নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সঙ্গে ভালো মডেলিংও।
চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়ে বলুন, শুনেছি জাজ-এর ব্যানারে কাজ করছেন?
কথা তো চলছে অনেকদিন থেকেই, কাজ শুরু করার আগ পর্যন্ত তেমন কিছু বলতে চাই না। তবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই। আর এর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। চলচ্চিত্রে অভিনয় বেশিরভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রীর স্বপ্ন। সেই জায়গা থেকে বললে চলচ্চিত্র
আমার কাছেও ধ্যান-জ্ঞান। তবে সেজন্য আরও সময় প্রয়োজন। আমি চাই চলচ্চিত্রই আমার ধ্যান-জ্ঞান হোক। ভালো গল্প, ভালো চরিত্র এবং গুণী পরিচালক এই তিন ব্যাটে-বলে মিললেই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করব।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তেমন কিছু নয়। নিজের ক্যারিয়ারে ঠিকঠাকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। সারা জীবন অভিনয়ের সঙ্গে থাকতে চাই। আর ভালো ভালো কাজ করার ইচ্ছে আছে। প্রচুর ভালো কাজ করতে চাই। শেষ পর্যন্ত একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়াটাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস