বিশ্ববাজারে চলতি বছর প্যালাডিয়ামের দাম নিম্নমুখী থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে দাম কমার হার সীমিত থাকবে বলেও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
প্যালাডিয়ামের সবচেয়ে বড় বাজার গাড়ি উৎপাদন শিল্প। গাড়ি থেকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ব্যবহার করা হয় অটোক্যাটালিক কনভার্টার। এটি তৈরিতে ব্যবহার হয় প্যালাডিয়াম। গত বছরের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ধাতুটির দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে। প্রতি আউন্সের মূল্য দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪৪০ ডলার ৭৬ সেন্টে। এর পর থেকে অব্যাহত দাম কমেছে। গত মার্চে ধাতুটির দাম ঠেকেছে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৩৪৮ ডলার ৭৮ সেন্টে। সে হিসাবে দাম কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ। বর্তমানে মার্চের তুলনায় দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। মঙ্গলবার প্রতি আউন্সের দাম ছিল ১ হাজার ৪৫০ ডলার।
বিশ্লেষকরা জানান, মূলত জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত গাড়িতেই অটোক্যাটালিক ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে গাড়ি উৎপাদন কমে যাওয়ায় ধাতুটির চাহিদাও নিম্নমুখী। দাম কমার পেছনে এটি একটি বড় কারণ। অন্যদিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন বৃদ্ধিও এ নিম্নমুখিতার পেছনে ভূমিকা রাখছে। এসব গাড়িতে অটোক্যাটালিক কনভার্টার ব্যবহার হয় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, কয়েক দশকের মধ্যে ডিজেলচালিত গাড়ির বাজার দখল করে নেবে বৈদ্যুতিক গাড়ি। এতে দীর্ঘমেয়াদে প্যালাডিয়ামের চাহিদা কমবে।
তবে দীর্ঘমেয়াদে দাম কমার আশঙ্কা দেখা দিলেও বর্তমানে ধাতুটির সরবরাহ অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন রয়াল ব্যাংক অব কানাডার লরা চেন। তিনি বলেন, ‘অটোমোবাইল বাজারে উৎপাদন কার্যক্রম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে। ফলে আমাদের প্রত্যাশা, বর্তমান অবস্থার তুলনায় দাম কিছুটা হলেও বাড়বে।’
রয়াল ব্যাংক অব কানাডার পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্ববাজারে প্যালাডিয়ামের ঘাটতি দাঁড়াবে প্রায় ৫ লাখ ৮৮ হাজার আউন্সে। আগামী বছর সেটি কমে দাঁড়াবে ১ লাখ ৮৩ হাজার টনে। প্যালাডিয়ামের মোট বৈশ্বিক চাহিদার ৮৫ শতাংশই তৈরি হয় অটোমোবাইল খাতে।
রয়টার্সের জরিপ অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে প্যালাডিয়ামের গড় দাম স্থির হতে পারে আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৫৫০ ডলারে। আগামী বছর তা কিছুটা কমে ১ হাজার ৫১৩ ডলারে নামতে পারে।
এনজে