সকালের নাস্তায় স্বাস্থ্যকর ৭টি খাবার

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-১৭ ১৩:৫১:০৮


Rutiসারাদিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন খাবার হলো সকালের নাস্তা। সকালের নাস্তাটা অন্য বেলার খাবারের চাইতে তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর এবং ভারী হতে হয়। এর বৈজ্ঞানিক কারণও আছে।

সারারাত শেষে সকাল বেলা রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকে। গ্লুকোজ হলো মস্তিষ্কের জ্বালানী। নাস্তা খাওয়ার পর রক্তের গ্লুকোজ স্বাভাবিক হয় এবং মস্তিষ্ক ঠিক মত কাজ করে। তাই প্রতিদিন সকালে স্বাস্থ্যকর এবং ভারী নাস্তা খেলে মস্তিষ্ক পুরোদিনের জন্য তৈরি হয়ে যায় এবং সারাদিন শক্তি পাওয়া যায়। তাই সকালের নাস্তা বাদ দেয়া উচিৎ নয় মোটেও।

সকালের নাস্তার ক্ষেত্রে এক একজন মানুষের এক এক রকম খাবার পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু সব ভারী খাবারই স্বাস্থ্যকর নয়। তাই আমাদের জানতে হবে সকালের নাস্তায় কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিৎ । এবং সেইসব খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে করে সকালের নাস্তা আপনাকে পুরো দিন রাখবে প্রানবন্ত এবং দেহ থাকবে সুস্থ।

১) ডিম:
ডিমকে বলা হয় ‘সুপারফুড’। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস। প্রোটিনের সব চাইতে ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। এবং এতে ক্যালোরিও থাকে বেশ কম। সকালের নাস্তায় অবশ্যই প্রত্যেকের ডিম খাওয়া উচিৎ। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ হিসেবে সকালে ২ টি ডিম খেলেই যথেষ্ট। তবে যারা একটু বেশি স্বাস্থ্যবান তাদের ডিমের কুসুম এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ। সকালে ডিম সেদ্ধ বা ডিমের অমলেট দিয়ে নাস্তা সারতে পারেন।

২) খিচুড়ি:
অনেকেরই সকালে ভাত খাওয়ার অভ্যাস। তারা ভাতের বদলে সকালের নাস্তায় রাখতে পারেন খিচুড়ি। তবে অবশ্যই সবজি খিচুড়ি। চালের পরিমাণ কমিয়ে বেশি পরিমাণে সবজি দিয়ে রান্না করা সবজি খিচুড়ি দিয়ে সেরে নিতে পারেন সকালের নাস্তা। এতে করে ভারী নাস্তা করা হলেও দেহে পৌঁছাবে পর্যাপ্ত পুষ্টি।

৩) ফল:
সকালের নাস্তার জন্য সব চাইতে ভালো খাবার হচ্ছে ফলমূল। কলা, আপেল, কমলা, আঙুর ইত্যাদি ধরণের ফলমূল অথবা মৌসুমি ফলমূল দিয়ে সকালের নাস্তা করা সব চাইতে ভালো। ২ টি কলা, ১ টি আপেল, ১ টি কমলা, ২/৩ টি স্ট্রবেরি এভাবে শুধুমাত্র ফল দিয়ে নাস্তা করা সকালের জন্য ভালো। চাইলে ফলমূল দিয়ে সালাদের মত তৈরি করেও খেতে পারেন।

৪) আটার রুটি:
সকালের নাস্তার জন্য বেশ ভালো একটি খাবার হচ্ছে আটার রুটি। বিশেষ করে যারা ভারী খাবার পছন্দ করেন। সকালে পাউরুটি বা ভাত খাবার চাইতে আটার রুটি সবজি ভাজি বা ডিম অথবা ঝোলের তরকারি কিংবা কলা দিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো। এছাড়া রুটি বেশ ভালো এনার্জি সরবরাহ করে আমাদের দেহে যা পুরো দিনই রাখবে সতেজ। তবে অবশ্যই তেলে ভাজা পরটা থেকে দূরে থাকবেন।

৫) সালাদ:
সালাদ শুনে চোখ কপালে তোলার কোন কারণ নেই। সালাদ মানেই যে শসা, টমেটো এবং গাজরের হতে হবে এমন কোন কারণ নেই। স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এই সকল সবজির সাথে সালাদে ব্যবহার করতে পারেন সেদ্ধ ডিম বা সেদ্ধ মাংস অথবা সেদ্ধ ছোলাবুট। এছাড়া খেতে পারেন ফলমূলের সালাদ। এইসব ধরণের সালাদ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং দিনের শুরুটা চমৎকার করতে বেশ কার্যকরী।

৬) ওটস:
ওটস জিনিসটা খেতে ভালো না লাগলেও এটি আমাদের দেহের জন্য অনেক ভালো একটি খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। ওজন কমাতে এবং কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওটসের জুড়ি নেই। সকালে হাবিজাবি খাবার বাদ দিয়ে একবাটি ওটস রাখুন। তবে কোন ফ্লেভারড বা চিনিযুক্ত ওটমিল খাবেন না। চিনির পরিবর্তে মধু এবং সাথে কিছু ফলমূল যোগ করে নিতে পারেন। ওটস খিচুড়িও নাস্তা হিসেবে চমৎকার।

৭) দই:
দিনের শুরুটা দই দিয়ে শুরু হোক অনেকেই তা চান না। কিন্তু দই দেহের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী একটি খাবার। এবং এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড়ের গঠনে কাজ করে। দিনের শুরু দই দিয়ে করলে পুরো দিন আপনার দেহে থাকবে অফুরন্ত এনার্জি। ক্লান্তি স্পর্শ করবে না দিনের শেষেও। সুতরাং সকালের নাস্তায় কিছু ফলমূলের পাশাপাশি রাখুন দই।