বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের চাহিদা পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে ওপেক।এ নিয়ে টানা তৃতীয় মাসের মতো পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হলো। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়ছে। বিপরীতে চীন প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে এগোচ্ছে। এ দুটি বিষয় জ্বালানি তেলের চাহিদাকে অপরিবর্তিত রাখতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে জোটটি। খবর রয়টার্স।
এ বিষয়ে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোটটি জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল বা ২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বাড়বে। এর আগের মাসের প্রতিবেদনেও একই হারে বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল ওপেক।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো। এ কারণে চলতি বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা বাড়তি থাকতে পারে। তবে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অন্য অর্থনীতির দেশগুলোয় চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার শ্লথ থাকবে।
ওপেক ও এর মিত্র দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস গত ২ এপ্রিল আরো এক দফা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো। কিন্তু এ পদক্ষেপ সফল হয়নি। কারণ বিভিন্ন দেশে একের পর এক সুদের হার বৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রে ঋণের সীমা নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগ উল্টো দাম কমিয়ে দেয়।
ওপেক বলছে, বর্তমানে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক আট লাখ ব্যারেল করে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগের মাসে দৈনিক ৭ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল করে বাড়ার আভাস দেয়া হয়েছিল। জিরো কভিড নীতি থেকে দেশটি সরে আসার কারণেই চাহিদা পূর্বাভাস বাড়ানো হয়েছে।
তবে বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার টানা তৃতীয় মাসের মতো অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। জোটটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২ দশমিক ৬ শতাংশেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। কারণ মূল্যস্ফীতি এবং উচ্চ সুদের কারণে ঋণ পরিশোধে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এপ্রিলে ওপেকের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ফের কমেছে। মূলত সম্মিলিত উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তের কারণেই এমনটা ঘটেছে।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে যেতে শুরু করলে গত বছরের নভেম্বরে ওপেক উত্তোলন দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল করে কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এত বেশি মাত্রায় কখনো উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
ওপেক জানায়, এপ্রিলে উত্তোলন দৈনিক ১ লাখ ৯১ হাজার ব্যারেল করে কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় কমেছে ইরাক ও নাইজেরিয়ায়। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কিছু রফতানি বন্ধ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে নাইজেরিয়ার কিছু রফতানি শ্রমিক সংকটের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ওপেক জোটের বাইরের দেশগুলো চলতি বছর দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল করে সরবরাহ বাড়াতে সক্ষম হবে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তবে বিনিয়োগস্বল্পতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এসব দেশের সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত করতে পারে।
এনজে