এশিয়ার বাজারে বাড়তির দিকে চালের দাম

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৫-২০ ১১:০১:৩৮


চালের উৎপাদনজনিত সীমাবদ্ধতা ও এল নিনোর আশঙ্কায় এশিয়ার বাজারে বেড়েছে চালের দাম। যদিও ভিয়েতনামে চালের দাম এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ডে চালের দাম গত চার মাসে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশটিতে ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম ৪৯৮ ডলার থেকে বেড়ে প্রতি টন ৫০০ ডলারে ঠেকেছে। চলতি বছরের জানুয়ারির পর এটিই সর্বোচ্চ দাম। মূল্যসূচক আগামী কিছুদিনের জন্য ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ডলারের বিপরীতে বাথের শক্তিশালী অবস্থান অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে মূল্য নির্ধারণে। তাছাড়া নতুন মৌসুমে ফসল উত্তোলন করতে হলেও এখনো বেশ সময়ের প্রয়োজন। দেশটির চাল ব্যবসায়ীদের মতে, জলবায়ুজনিত কারণে অন্যান্য দেশেও চলতি বছরের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমতে পারে। ফলে দাম বাড়ার আশঙ্কা এত সহজে কমছে না। তাছাড়া ‌অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ার কারণেও চালের দাম বেড়েছে।

২০২৩ সালের শেষ দিকে এল নিনো শক্তিশালী হওয়ার পূর্বাভাসে নীতিনির্ধারকরা উদ্বিগ্ন। সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট উষ্ণ স্রোতকে মূলত এল নিনো বলে। এ সময়ে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। এর প্রভাবে দেখা দেয় বন্যা, খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এল নিনো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও খাদ্য সরবরাহের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার কারণে রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হয়।

ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা সতর্ক করেছেন চাল উৎপাদনে প্রতিকূল প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে। দেশটিতে ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম ছিল প্রতি টন ৪৮৫-৪৯৫ ডলার। গত সপ্তাহের তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকলেও তা প্রভাবিত হতে পারে। চাহিদা বেশি থাকলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ প্রতিনিয়ত কমছে।

হো চি মিন-ভিত্তিক এক ব্যবসায়ীর মতে, চলতি বছর মিয়ানমার ও পাকিস্তানের মতো চাল প্রস্তুতকারক দেশগুলোয় উৎপাদন ছিল তুলানামূলকভাবে  কম। এদিকে মেকং ডেল্টা প্রদেশের কৃষকরা গ্রীষ্মকালের জন্য ফসল বপন শুরু করেছেন।

অন্যদিকে ভারতের বাজারেও এল নিনোর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমেই এটি আঘাত হানতে পারে। ভারতের ৫ শতাংশ ভাঙা সিদ্ধ চালের দাম ৩৭৪-৩৭৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে সম্প্রতি। গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে দাম। চাহিদা কমে যাওয়া ও ডলারের বিপরীতে রুপির অবমূল্যায়ন হওয়া ছিল দাম কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ। রুপির অবমূল্যায়নের কারণে অবনমন ঘটেছে রফতানি মূল্যও। তার ওপরে চাহিদা ছিল তুলনামূলকভাবে দুর্বল। তবে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন প্রভাবিত হয়নি এখন পর্যন্ত। সম্প্রতি আঘাত হানা সাইক্লোন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ওপর দিয়ে অতিক্রম করলেও উৎপাদন খাত তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। দেশের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চলমান মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় সাইক্লোনের সম্ভাব্য আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়াটা বেশ স্বস্তির।

এনজে