বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এক সময় এই বাংলাদেশ নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হতো। বলা হতো- ‘বাংলাদেশ ইজ নাথিং, বাট এ বটমলেস বাস্কেট।' কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আজ আমরা গর্ব করে বলতে পারছি- বাংলাদেশ ইজ নাথিং, বাট ইজ মিরাকল।
যারা বলেছিল, বাংলাদেশ হবে গরিব রাষ্ট্রগুলোর মডেল। আজ তারাই বাংলাদেশের বিস্ময়কর উত্থান থেকে অবাক হচ্ছেন। নোবেল জয়ী অর্মত্য সেন বলেছেন, উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারত থেকেও এগিয়ে। আজ শুক্রবার দুপুরে লায়ন্স ‘জেলা ৩১৫-বি ৪’র ১৯তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, যে দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিল, খাদ্যের অভাব ছিল। এখন ১৬ কোটি মানুষ, খাদ্যে আমরা উদ্বৃত্ত। বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি সুগন্ধী চালের পাশাপাশি এবার সাধারণ মানের চাল রপ্তানির জন্য বাজার খুঁজছি- কোথায় আমাদের চাল রপ্তানি করা যায়। সুগন্ধী চাল প্রতিদিনই ৫ হাজার, ১০ হাজার টন রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছি। অনুমতি লাগে চাল রপ্তানিতে। কিন্তু সাধারণ চাল রপ্তানি করারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগে আমাদের জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৭৬ শতাংশ। এখন ১৫ শতাংশ। শিল্পের অবদান ৩০ শতাংশ। সার্ভিস সেক্টরের অবদান ৫০ শতাংশ। সাড়ে চার মিলিয়ন অর্থাৎ ৪৫ লাখ বোন-ভাই গার্মেন্ট এর সঙ্গে জড়িত। আমাদের গার্মেন্ট থেকেই ২০২১ সালে এ খাতে রপ্তানি আয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, যে বাংলাদেশে ৭২ সালে বাজেট ছিল ৭৮৭ কোটি টাকা। এক হাজার কোটি টাকাও না। গত বছর বাজেট ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এবার হতে চলেছে বাজেট ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। কোথায় এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে এক্সপোর্ট ছিল মাত্র ৩০০ মিলিয়ন। সেই বাংলাদেশে এখন ৩৫ বিলিয়ন এক্সপোর্ট হয়। তিনি আরো বলেন, এবার আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। কিন্তু আমাদের অর্জন হবে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম আমাদের হার্ট। চট্টগ্রাম দিয়ে সব আমদানি-রপ্তানি হয়। তাই এই নগরের গুরুত্ব জাতীয়ভাবে অনেক বেশি। চট্রগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন লায়ন্স জেলা গভর্নর মোস্তাক হোসাইন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর লায়ন শেখ কবির হোসেন, মাল্টিপল কাউন্সিল চেয়ারপারসন ইঞ্জিনিয়ার এমএ আউয়াল, ডিরেক্টর এনড্রোসি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, সদ্য প্রাক্তন জেলা গভর্নর সিরাজুল হক আনসারী।