পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইস), ডিএসই, সিএসই, বিএমবিএ, ডিবিএসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক প্রস্তাব দিয়েছিলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর)। প্রস্তাবের কোন প্রতি ফলন হয়নি প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে। তবে নতুন কোন খারাপ খবরও নেই।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেখানে কোম্পানিগুলোর করপোরেট করসহ অন্যান্য নীতিমালা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার কমানো এবং তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির মধ্যকার করহারের ব্যবধান বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার সাড়ে ৭ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছিল তারা। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে সাড়ে ২২ শতাংশ কর দিতে হয়। তাদের প্রস্তাবনা ছিল-এটিকে কমিয়ে যেন ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। তাদের এই প্রস্তাব নাকোচ করে আগের মতোই রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।
অন্যদিকে বাজারকে আরও গতিশীল করতে বিএসইসিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছিলো। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে সুযোগ দেওয়ার পর কোন সাড়া না পাওয়ায় এই প্রস্তাবেও কোন সম্মতি মিলেনি।
এদিকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ বাবদ আয় থেকে কেটে রাখা করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই বিষয়ে কোন সিদ্ধন্ত নেয়নি অর্থ মন্ত্রী। ফলে আগের মতোই বহাল থাকছে দৈত কর।
পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়িয়ে কমপক্ষে ২ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলেন। বর্তমানে এই সীমা ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশ আয় পর্যন্ত কোনো কর দিতে হয়নি। কোনো বিনিয়োগকারী এরচেয়ে বেশি লভ্যাংশ পেলে বাড়তি লভ্যাংশ তার অন্যান্য আয়ের সাথে যোগ করে মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য হারে কর ধার্য করা হয়।
করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়লে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে। বৃদ্ধি পাবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রবণতা। তাতে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বাড়বে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই ধরে নেওয়া যায়, বর্তমান সীমা-ই বহাল থাকবে। তবে অর্থবিল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাবে না। অর্থবিলে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা থাকলেও থাকতে পারে।
বর্তমানে জিরো-কুপন বন্ডের (যে বন্ডে সুদ বা মুনাফা বিতরণের কোনো কুপন যুক্ত থাকে না) আয়ে করমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। সব ধরনের বন্ড জনপ্রিয় করে একটি কার্যকর বন্ড মার্কেট চালুর লক্ষ্যে কুপনযুক্ত বন্ডের আয়কেও একই সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল বিএসইসি।
ঘোষিত বাজেটে বন্ডের আয়ে কর সংক্রান্ত কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। ফলে কুপনযুক্ত বন্ডের আয় করমুক্ত হচ্ছে না। অর্থাৎ এই ধরনের বন্ডের আয়ের উপর কর দিতে হবে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর বিদ্যমান অগ্রিম আয়করের হার কময়ে ০.০১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্রোকার ও বিনিয়োগকারী লাভবান হবে। বাজারে লেনদেন বাড়বে। আর দীর্ঘ মেয়াদে তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) মার্চেন্ট করপোরেট করের হার কমানোর প্রস্তাব করেছছিল। বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ববাণিজ্যিক ব্যাংকের সমান হারে অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই ধরে নেওয়া যায়, বর্তমান সীমা-ই বহাল থাকবে। তবে অর্থবিল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাবে না। অর্থবিলে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা থাকলেও থাকতে পারে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
এএ