দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এবার থেকে খরচ আরও বাড়বে। কেননা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশগামী বিমান যাত্রীদের ওপর কর ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত কর বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আকাশপথে দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও যাত্রীদের ২০০ টাকা করে কর দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭,৬১,৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রস্তাবিত বাজেটে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর ৬৭% বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৩৩% বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা এবং অন্যান্য দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৫০% বর্ধিত করে ৬ হাজার টাকা করের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও স্থলপথ অথবা জলপথে কোনো দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা কর আরোপ হবে।
এর আগে, গন্তব্যস্থল এবং পরিবহন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে বহির্গামী যাত্রীদের জন্য ৫০০-৪০০০ টাকা কর নির্ধারিত ছিল।
তবে অর্থনীতিবিদরা বর্তমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে চাপে থাকা মানুষের উপর নতুন করে করের ভার না বাড়িয়ে বরং করযোগ্য ব্যক্তিদের করের আওতায় আনতে ট্যাক্স নেট বাড়ানো যৌক্তিক বলে মত দেন।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক টিবিএসকে বলেন, "এভাবে হঠাৎ হঠাৎ ট্যাক্স না বাড়িয়ে ট্যাক্সের নেট বাড়ানো উচিত। বর্তমানে এমনিতেই মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছে। নতুন করে করের ভার বাড়ানো যৌক্তিক হবে না।"
সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছে ১১ লাখ ৩৫ হাজার কর্মী, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এসব শ্রমিককেও ভ্রমণ কর দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ শ্রমিক যায় মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে।
এর আগে এনবিআরের সাবেক সদস্য (কর নীতি) ড. সৈয়দ মো. আমিনুল করিম টিবিএসকে বলেন, শ্রমিক এবং চিকিৎসার জন্য যায়, এমন ব্যক্তিদের উপর ট্যাক্স বাড়ানো উচিত হবে না।
অবশ্য টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ট্রাভেল ট্যাক্স বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেছিলেন, "গত কয়েক বছরে ভ্রমণ কর বাড়েনি। এই সময়ে টাইম ভ্যালু অব মানি হিসাব করলে বাড়ানো যৌক্তিক।"
বিশেষত ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যারা ভ্রমণ করেন, তাদের উপর ভ্রমণ কর বাড়ানোর যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৪ সালে ভ্রমণ কর বাড়ানো হয়েছিলো।
এএ