আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের অনুমিতিগুলো দুর্বল। তাই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে হোঁচট খেতে হবে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, চলমান অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২০২৩ সালের বাজেটটি যখন দেওয়া হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতি কী এবং আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ অভিঘাত কী তা স্পষ্ট করা ছিল। তারপরও আমরা সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরেছি, মুদ্রাস্ফীতি ধরেছি ৫.৪ শতাংশ। আমরা ধরেছিলাম যে, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৬ বিলিয়ন ছিল, আর তার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমরা ধরেছি যে, আমাদের ডলার এক্সচেঞ্জ রেট ৪৬ টাকার পরিবর্তন হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে বলি বছরের পর বছর অনুমিতিগুলো সত্য হয় না এবং বাস্তবতার সঙ্গে মিল থাকে না। তখন যখন বাজেট করা হয় সেই বাজেটের পরিণতি সেটাই হয় যেটা অনুমিতির কারণে দুর্বল ছিল। আপনারা দেখেছেন এবার সাড়ে ৭ শতাংশের জায়গায় ৬.০৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রিজার্ভ ৪৬ বিলিয়নের জায়গায় ৩১ বিলিয়ন (২৯ বিলিয়ন) হল। ডলার এক্সচেঞ্জ রেইট ১০৮ টাকা হলো। মুদ্রাস্ফীতি সাড়ে ৮ শতাংশ হলো। বাস্তবতাকে বিবেচনা না করে আকাঙ্ক্ষাকে মাথায় রেখে বাজেট করলে এ অবস্থা হয়।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন অর্থবছরের বাজেটের মূল উদ্দেশ্যে থাকা উচিত ছিল চলমান অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতার সংকট রয়েছে সেটা ঠিক করা। কিন্তু এবারের বাজেট যেসব অনুমিতির ভিত্তিতে করা হয়েছে, সেই জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে এসব দুর্বল জায়গার প্রতিটিতে বাজেট পরিকল্পনা হোঁচট খাবে। এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে।’
ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া প্রসঙ্গে সিপিডির এই বিশেষ ফেলো বলেন, দেখতে হবে সংস্কারের কোন জায়গাগুলোতে শক্তভাবে হাত দিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা যাবে। আমরা অনেক দিন ধরে বলছি একটি ব্যাংকিং কমিশন করার জন্য। ২০০৯ সালে যখন এই সরকার ক্ষমতায় আসে তখন ঋণ খেলাপি ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আজকে ঋণ খেলাপি ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। এটা নিয়ে কি কারও কোনো দুশ্চিন্তা নেই। এটা কারা নিচ্ছেন (ঋণ), আর কারা দিচ্ছেন। এ কারণে ব্যাংকিং খাতে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
এম জি