প্রথাগত সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী হিন্দুরা মনে করেন, ‘পবিত্র’ পানিতে গোসলের মাধ্যমে তাদের ‘পাপমুক্তি’ ঘটে।
এই বিশ্বাসের সঙ্গে তথ্য-প্রমাণের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে অবিশ্বাসের এই যুগে প্রমাণ ছাড়া যখন কেউ কিছুই আর বিশ্বাস করতে চান না; তখন ‘পাপমুক্তি’র সনদ বিতরণ করছে রাজস্থানের এক শিব মন্দির। চলছে ব্যবসাও। সনদ পেতে একজন পুণ্যার্থীকে গুণতে হচ্ছে ১১ রূপি করে।
গৌতমেশ্বর মহাদেব পাপমোচন তীর্থ নামক শিব মন্দিরটি রাজস্তানের প্রতাপগড় জেলায় অবস্থিত। মন্দিরটির কূয়াতে একবার গোসল করে ১১ রুপি পরিশোধের পর দেওয়া হয় ‘পাপমুক্তি’র সনদ।
মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে যারা মান্দাকিনি কুয়াতে নেমে গোসল করেছেন ও পাপমুক্তির সনদ নিয়েছেন, তাদের সবার তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।
পুরোহিতরা জানান, সনদপত্রের জন্য ১ রুপি নেওয়া হয়। আর ১০ রুপি নেওয়া হয় ‘দশ নিভারণ’ (বাধা দূর)-এর জন্য। পুরোহিত নন্দিকিশোর শর্মা আরও জানান, মানুষ তাদের গ্রামে এসে কূয়ায় গোসল করে এবং পাপমুক্তি সনদ নিয়ে যায়।
শর্মা জানান, শত বছর ধরে মন্দিরটি বিখ্যাত। উপজাতির মানুষদের মধ্যে এ মন্দিরটির তাৎপর্য অনেক বেশি। মে মাসে গৌতমেশ্বর মন্দিরে লাখো পুণ্যার্থীর সমাবেশ ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুন্যার্থীর সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু এখন অনেকেই আর সনদপত্র নিতে চান না। মে মাসে আট দিনের মেলাতে প্রায় দুই লাখ পুণ্যার্থী কুয়াতে গোসল করেন। কিন্তু সনদপত্র নিয়েছেন মাত্র তিনজন।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, গৌতম ঋষি নামক ব্যক্তি পশু হত্যার কারণে অভিশপ্ত হয়েছিলেন। এই কুয়ায় গোসল করে তিনি নিজেকে শাপমুক্ত করেন। এরপর থেকেই কুয়াতে গোসল করে ‘পাপমুক্তি’র প্রচলন শুরু।
মন্দিরের অপর এক পুরোহিত বলেন, মানুষ যখন চাষাবাদ করে তখন তারা অনেক পোকামাকড়, অন্যান্য প্রাণী, পাখির ডিমসহ অনেক কিছুই হত্যা করে। এতে তাদের মনে অনুশোচনা জন্মে। তারা ভগ্ন মন নিয়ে আসে কিন্তু মুক্তির বিশ্বাস নিয়ে যায়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
সানবিডি/ঢাকা/এসএস