রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে শীর্ষে ভারত-চীন
সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৩-০৬-১৭ ১০:২৭:২৮
রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের মধ্যে চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়া থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ জ্বালানি তেল আমদানি করেছে ভারত ও চীন। বিশ্বের প্রথম সারির জ্বালানি আমদানিকারক দেশ চীন ও ভারত। অন্যদিকে এশিয়ায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়াতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া। ফলে রাশিয়ার ছাড়মূল্যের সুযোগ নিচ্ছে ভারত ও চীন। চলতি বছরের মে মাসে ভারতের আমদানি বেড়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ লাখ ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে। চীনের আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিদিন গড়ে ২২ লাখ ব্যারেল। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) চালানো সাম্প্রতিক জরিপে এমনটাই ওঠে এসেছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
এ বিষয়ে আইইএর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও চীনই রাশিয়ার রফতানি করা জ্বালানি তেলের ৮০ শতাংশ আমদানি করেছে। ভারতের আমদানি করা জ্বালানি তেলের ৪৫ শতাংশ ও চীনের আমদানি করা জ্বালানি তেলের ২০ শতাংশই এসেছে রাশিয়া থেকে। অথচ ফেব্রুয়ারিতেও ভারত ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেল রাশিয়া থেকে আনত। ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে রাশিয়ার জ্বালানি তেল উৎপাদন উত্তীর্ণ হয় গড়ে প্রতিদিন ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল। ২০২৩ সালে পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রতিদিনের গড় উৎপাদন দাঁড়াবে ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল। জ্বালানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভরটেক্সার দাবি অনুসারে, ভারত মে মাসে ১৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে।
আইইএর দাবি, নিষেধাজ্ঞা আরোপ সত্ত্বেও রাশিয়ার জ্বালানি তেল সরবরাহ আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো করছে। তৈরি করেছে নতুন বাজার। রাশিয়ার ছাড়মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রির কারণে চীন ও ভারত মূল্যস্ফীতি কম রাখতে সক্ষম হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান মুডি’সের বিশ্লেষণ অনুসারে, ভারত গত বছরের তুলনায় রাশিয়া থেকে আমদানি দ্বিগুণে পরিণত করেছে। ফলে বৈশ্বিক মন্দাবস্থার সময়েও মূল্যস্ফীতির লাগাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে চীনের আমদানি গন্তব্য হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীনের আমদানীকৃত জ্বালানি তেলের ২০ শতাংশ আসত রাশিয়া থেকে, যা বর্তমানে অপরির্তিত। কিন্তু মহামারির পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে রাশিয়ার ছাড়মূল্যে জ্বালানি তেলের সুবিধা চীনকে উপকৃত করেছে। বিশেষ করে আমেরিকার সঙ্গে যখন রাজনৈতিক টানাপড়েন চলছে, সে সময়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
যদিও চীন ও পশ্চিমের সঙ্গে ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন এখনো চলমান। অন্যদিকে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের জেরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা দুনিয়া। স্বাভাবিকভাবেই বিকল্প বাজার অন্বেষণে এশিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় রাশিয়া। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও চীনের সঙ্গে তৈরি করে নতুন সম্পর্ক। পশ্চিমা দুনিয়ার বাণিজ্যিক অবরোধের আঘাত অনেকটাই পুষিয়ে দিচ্ছে চীন ও ভারতের মতো দেশের আমদানি সূচক। বর্তমানে রাশিয়া, চীন ও মধ্যপ্রাচ্য মিলিয়ে নতুন যে অক্ষশক্তি গড়ে উঠেছে, তা ক্রমেই সঞ্চয় করছে শক্তি। তার মাধ্যমেই নির্ধারিত হচ্ছে অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি। সৃষ্ট নতুন সম্পর্ক আগামী দিনগুলোয় জ্বালানি রফতানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে থাকবে।
এনজে