স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সুন্দরবনের বনদস্যু 'মাস্টার বাহিনী'র প্রধান সোহাগ ওরফে মাস্টার সোহাগসহ (৩৪) অর্ধশতাধিক সদস্য র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। রোববার ভোরে দেশী-বিদেশী অর্ধশতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ তারা আত্মমর্পণ করেন।
তবে দুপুরে মংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের উপস্থিতিতে এই বাহিনীর সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করবেন। র্যাব-৮ এর জোনাল কমান্ডার ফরিদুল আলম বলেন, 'সবকিছু ঠিক থাকলে দুপুর দেড়টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো সুন্দরবনের কোনো বনদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করবে।' ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বাধীনতার পর বিগত দুই দশক ধরে সুন্দরবনে বনদস্যুরা জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, সুন্দরবন সংলগ্ন বন অফিসে হানা দিয়ে অস্ত্র ছিনতাই, জেলে-বাওয়ালীদের থেকে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া আর দস্যুতা ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে সম্প্রতি সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বনদস্যুদের রুখতে র্যাব-৮ বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বিগত ৫ বছরে আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক বনদস্যু। এ অবস্থায় সুন্দরবনের বনদস্যু রাজু, মাস্টার বাহিনীসহ অনেকেই আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা চালায়। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় তারা আত্মসমর্পণ করতে পারেনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, বনদস্যুরা দসুত্যা বাদ দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে সাধুবাদ আমরা জানাই। তিনি জানান, বনদস্যু ওই বহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আত্মসমর্পণের আবেদন করেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে মংলায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ অস্ত্র ও দস্যু দলের আত্মসমর্পণ হবে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনার পর এসব বাহিনীর সদস্যদের পুর্নবাসনের ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে।