দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ক্যামেরার মাধ্যমে মাত্র ১০ সেকেন্ডে আগুন লাগার খবর ম্যাপ ও ছবিসহ পাঠানো সম্ভব ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে। এ তথ্য জানিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর খলিলুর রহমান।
শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আয়োজনে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
খলিলুর রহমান বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে স্থাপিত ক্যামেরার মাধ্যমে মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে আগুন, ধোঁয়া শনাক্ত করে ম্যাপ ও ছবিসহ পাঠানো সম্ভব ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে। সেখান থেকে কল যাবে ফায়ার সার্ভিস, ভলান্টিয়ারসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানে। এতে করে কমে আসবে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ। এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের একদল গবেষক।
এআই হতে পারে অগ্নি শনাক্তকরণ এবং সতর্কতা ব্যবস্থার কার্যকরি উদ্যোগ এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুর্যোগের ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ড একটি সাধারণ ঘটনা, যা ঢাকাসহ সারা দেশে ছোট থেকে বড় দুর্যোগ সৃষ্টি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জাতীয় কৌশল বিবেচনা করা এখন সময়ের দাবি।
স্মার্ট প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে দুর্যোগ মোকাবিলার কৌশলও এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের গবেষণা সমীক্ষায় দেখা গেছে, এআই মডেল প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভুলভাবে স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস দিতে পারে। দ্য ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটিভিত্তিক সেন্সর মডিউল নির্দেশ করে, এটি সিসি ক্যামেরার সহায়তায় আগুন কিংবা ধোঁয়া দেখেই সিগন্যাল দেয়। এতে সিসিটিভির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে আগুন বা ধোঁয়া শনাক্ত করা সম্ভব।
খলিলুর রহমান বলেন, একটি বাসায় যদি চারটি সিসিটির একসেস আমাদের দেয়া হয়, তবে আমরা আমাদের সার্ভার বা প্রাইভেট সেক্টর ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিইওসি) থেকে নজরদারি করব। ক্যামেরা ১৫০ গজ পর্যন্ত যদি সক্ষমতা থাকে, তবে সামনে পেছনে কাভার করা সম্ভব ৩০০ গজ। যা মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ধারণ করা আগুন বা ধোঁয়া দেখেই পূর্ভাবাস দেবে। এরপর তা আরও নিশ্চিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত জানাবে। এতে করে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলা কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে।
সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ঝুঁকি নিরসনে সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজের মাধ্যমে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া এখন দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে হবে। একই সঙ্গে জরুরি কার্যক্রম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাথমিক শনাক্তকরণের মাধ্যমে দুর্যোগের ঝুঁকি নিরসন করতে হবে।
এ সময় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, ঢাকা চেম্বারসের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ প্রমুখ।
এএ