২০১৫ সালের শেষ দিকে হঠাৎ ছন্দপতন হয় স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের। ঠিক সে সময়েই দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় জিনেদিন জিদানের হাতে। আর ওই টালমাটাল সময়ে হাল ধরে দলের চেহারাই পরিবর্তন করে দিলেন ফ্রান্সের এই ফুটবল জাদুকর। ক্লাবের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের ৫ মাস পেরুনোর আগেই ইউরোপ সেরার পুরস্কার এনে দিলেন তিনি। তলানিতে থাকা রিয়ালের কারিগর হয়ে শিরোপা জেতালেন দলকে।
ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে হয়তো আর বেশি কিছু করতে হবে না জিদানকে। খেলোয়াড় হিসেবে দলকে ইউরোপ সেরা পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। এবার কোচ হয়ে শিষ্যদের পায়ের ভর করে রিয়াল মাদ্রিদকে ইউরোপ সেরা ক্লাব করলেন এই মহাতারকা।
ইতিহাসের পৃষ্ঠায় অমরত্ব পেতে পাহাড় ডিঙানো কিংবা মহাসমুদ্র এবং অযুত-নিযুত ক্রোশ দূরত্বও পাড়ি দেওয়ার মতো কঠিন কিছু করতে হয় না বলে প্রমাণ করলেন জিদান। মাত্র ৬ মাসের পরিশ্রমেই ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেলেন ফ্রান্সের সাবেক এই ফুটবলার।
পেশাদার কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর পর পেপ গার্দিওলা প্রথম মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে এক বছর সময় নিয়েছিলেন তিনি। আর মাত্র ৬ মাসে দলকে ইউরোপ সেরা লিগ জেতালেন জিনেদিন জিদান।
রিয়ালের সর্বশেষ তিনটি ইউরোপ সেরা ট্রফির সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন জিদান। ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সে সময় ওই ক্লাবের খেলোয়াড় ছিলেন জিদান। এর ১২ বছর পর আবারও ইউরোপ সেরা শিরোপা জিতল রিয়াল। আর ওই সময়ে আনচেলত্তির সহকারী হিসেবে এই ক্লাবে ছিলেন জিদান। ২০১৬ সালে মূল কোচ হিসেবে শিরোপা জেতালেন ক্লাবকে।
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতানোর তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থানটি দখল করেছেন জিদান। এর পাশাপাশি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের তালিকা যোগ করলে অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবেন তিনি।
আধুনিক ফুটবলের একজন জাদুকর জিদান- এই প্রমাণ ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপেই দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকার পর ২০০৬ সালে আবারও নিজের সামর্থ্যের কথা জানান দিয়েছিলেন এই ফুটবলার।
জিদানের জাদু শুধু তার পায়ে নয়; চিন্তায়ও জাদুর পরশ রয়েছে তার- এবার সেই প্রমাণ দিলেন তিনি। রিয়ালকে বদলে দিতে গার্দিওলার মতো বৈপ্লবিক কোনো আবিষ্কার নিয়ে হাজির হননি জিদান। কিন্তু দলের মধ্যে আনচেলত্তি আর বেনিতেজের কৌশলের ভারসাম্যপূর্ণ মিশ্রণ গড়ে দিলেন তিনি; এনে দিলেন নতুন ব্লেন্ড।