আইপিএলের নবম আসরে বিরাট কোহলিদের কাঁদিয়ে শিরোপা জিতল মুস্তাফিজুর রহমানের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আর এই জয়ের ফলে আইপিএলে নিজের অভিষেক আসরেই শিরোপার স্বাদ পেলেন বাংলাদেশের তরুণ বোলার মুস্তাফিজ। রোববার ফাইনালে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে (আরসিবি) ৮ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। ২০৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান সংগ্রহ করে আরসিবি।
চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের মিশনে শুরু থেকেই ব্যাটিং তাণ্ডব চালান ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। গেইল-কোহলি জুটিতে মাত্র ১০ দশমিক ৩ ওভারে ১১৪ রান সংগ্রহ করে আরসিবি। এরপর ৩৮ বলে ৮টি ছয় এবং ৪টি চারের সাহায্যে ৭৬ রানে বেন কাটিংয়ের বলে আউট হন গেইল।
আরসিবি অধিনায়ক কোহলিপরে বিরাট কোহলিও ৩৫ বলে ৫৪ রান করে চরনের বলে আউট হয়ে যান। আরসিবিকে কোয়ালিফাইং ম্যাচে জিতিয়ে ফাইনালে তোলা ভিলিয়ার্সও আজ ব্যর্থ হন। তিনি মাত্র ৫ রান করে বিপুল শর্মার বলে হেনরিকসের হাতে ধরা পড়েন। রাহুলও দ্রুতই সাজঘরে ফিরে গেলে জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় আরসিবির। রাহুল ১১ রান করে কাটিংয়ের বলে বোল্ড হন।
এরপরই মুস্তাফিজ ম্যাজিকে মাত্র ১১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আরসিবির অন্যতম ব্যাটিং ভরসা ওয়াটসন। ওয়াটসন হেনরিকসের হাতে ধরা পড়েন। একসময় মনেই হয়েছিল রানের পাহাড় টপকে দলকে জয় এনে দেবেন গেইল-কোহলিরা। কিন্তু মুস্তাফিজ-ভুবনেশ্বরদের দিয়ে গড়া হায়দরাবাদের বোলিং লাইনআপের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হলো আরসিবির ব্যাটসম্যানদের।
এর আগে টস নামক ভাগ্য পরীক্ষায় জয়লাভ করেন হায়দরাবাদের দলপতি ওয়ার্নার। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রান সংগ্রহ করে হায়দরাবাদ। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন ওয়ার্নার এবং শিখর ধাওয়ান।
৬ দশমিক ৪ ওভারে এই জুটি স্কোরবোর্ডে জমা করে ৬৩ রান। বিপদজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন চাহাল। ধাওয়ান ২৮ রানে চাহালের বলে ক্রিস জর্ডানের হাতে ধরা পড়েন। ধাওয়ানের বিদায়ের পর দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন অজি অলরাউন্ডার ময়েজেস হেনরিকস। তিনি ৪ রান করে জর্ডানের শিকারে পরিণত হন।
শিরোপা জয়ের পর হায়দরাবাদের উল্লাসএরপর ব্যাটিংয়ে আসেন মারকুটে ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং। যুবিকে সঙ্গে নিয়ে ২৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ওয়ার্নার। ওয়ার্নার ৩৮ বল খেলে ৩টি ছয় এবং ৮টি চারের সাহায্যে ৬৩ রান করে আরাভিন্দের বলে ইকবাল আব্দুল্লাহর তালুবন্দি হন। বরাবরের মতো ব্যাট হাতে আজও ব্যর্থ দীপক হুদা। ৬ বল খেলে মাত্র ৩ রান করে আরাভিন্দের বলে কোহলির হাতে ধরা পড়েন তিনি।
ক্রমেই বিপদজ্জনক হয়ে ওঠা যুবরাজ সিংকে পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরান জর্ডান। যুবরাজ ২২ বলে ৩৮ রান করে ওয়াটসনের হাতে ক্যাচ দেন। শেষ দিকে বেন কাটিংয়ের ১৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংসে ২০৮ রানে শেষ হয় ওয়ার্নারদের ইনিংস। কাটিংয়ের ইনিংসে ছিল ৪টি ছয় এবং ৩টি চারের মার।
আরসিবির হয়ে সবচেয়ে খরুচে বোলার ওয়াটসন। তিনি চার ওভার বল করে ৬১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। তাছাড়া জর্ডানও ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়েছেন। তবে তিনি ৩টি উইকেট লাভ করেছেন। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের কারণে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন হায়দরাবাদের বেন কাটিং।