ভারতে চলতি অর্থবছরে ইস্পাতের চাহিদা আরো দৃঢ় হবে। এ সময়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হওয়ায় ব্যবহার বেড়ে দাঁড়াবে দুই অংকে। পাশাপাশি দ্রুত নগরায়ণ ও আনুষঙ্গিক নীতি পুনর্গঠনও এখানে বেশ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন টাটা স্টিলের চেয়ারম্যান নটরাজন চন্দ্রশেখরান। প্রতিষ্ঠানটির এক বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর রয়টার্স।
এ বিষয়ে নটরাজন জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছর বেশকিছু তীব্র ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখেছে। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল অবিরাম বিঘ্নিত হয়েছে। তাতেই বিশ্বের ইস্পাত খাতে বেশ বাধা সৃষ্টি হয়েছে। বৈশ্বিক পরিবেশের এমন অস্থিরতার মধ্যে বৈশ্বিক ইস্পাত খাতে বেশ প্রভাব তৈরি হয়, ফলে ইস্পাতের চাহিদা-সরবরাহ ভারসাম্যে বেশ প্রভাব আসে। এসব কারণে ইস্পাতের দামেও বেশ অস্থিরতা তৈরি হয়।
যদিও বিশ্বের ইস্পাতের রঙ্গভূমিতে ভারতের অবস্থান ভিন্নরকম। প্রাথমিকভাবে সরকারি খরচ ও ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। নটরাজন আরো বলেন, ‘ভারতের ইস্পাত ব্যবহার বছরওয়ারি হিসাবে ১০ শতাংশ বেড়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ কোটি ৭০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। আবার যেহেতু ভারতের অর্থনীতিতে উন্নয়নকাজ চলছেই এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে, সুতরাং জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ইস্পাতের প্রবৃদ্ধি আগামী দশক নাগাদ চলতেই থাকবে।
মুনাফা, ইস্পাত ব্যবহারকারী খাত যেমন নির্মাণকাজ, মূলধনী পণ্য, রেলওয়ে এবং অটোমোটিভ খাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী চাহিদা না থাকায় বেশ খারাপ অর্থবছর পার করেছে টাটা স্টিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির একত্রীকৃত রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৫৩ কোটি রুপিতে, বছরওয়ারি হিসাবে যা দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। এ সময় ২০২২-২৩ অর্থবছরে একত্রীকৃত প্রফিট আফটার ট্যাক্স (পিএটি) দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৫ কোটি রুপিতে, এটিও বছরওয়ারি হিসেবে কমেছে ৮০ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুনাফা কমে যাওয়ার পেছনে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যেটা টনপ্রতি বেড়েছে ৪০ শতাংশ। চন্দ্রশেখরন বলেন, ‘বছরজুড়ে চাহিদা কমে যাওয়া এবং রফতানি কর প্রয়োগ করার কারণেই ভারতের ইস্পাত খাতে এমন অবনমন তৈরি হয়েছে।’
বর্তমানে ইস্পাত খাতের যে অবস্থা গত নভেম্বরে সেটা পুনঃস্থাপিত করে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার, এ সময়ে ইস্পাত পণ্য ও আকরিক লোহার ওপর থেকে রফতানি কর তুলে নিয়ে আরো ভালো শেষ প্রান্তিকের পথ তৈরি করা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনজে