বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস আজ। তামাক ব্যবহার প্রতিরোধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে ১৯৮৭ সাল থেকে ৩১ মে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো।
তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকি তুলে ধরতে এবার বিভিন্ন দেশের সরকারকে প্লেইন প্যাকেজিং প্রবর্তনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর এই বছরে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে, সাদা মাটা মোড়ক (প্লেইন প্যাকেজিং)- তামাক নিয়ন্ত্রণে আগামী দিন।
বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শোভাযাত্রা এবং সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় আয়োজিত শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভায় তামাকবিরোধী বেসরকারি সংস্থাও অংশগ্রহণ করবে।
তামাকবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, তামাকের ব্যবহার কমাতে প্লেইন প্যাকেজিং (সাদামাটা মোড়ক) অত্যন্ত কার্যকর। এই পদ্ধতিতে তামাকপণ্যের প্যাকেট বা কৌটায় প্রচারণামূলক ও বিভ্রান্তিকর শব্দ ব্যবহারের সুযোগ থাকে না। ফলে ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সর্তকবাণীর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে ব্যবহারকারীর কাছে তামাকের প্যাকেট বা কৌটার আকর্ষণ কমে যাবে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ.বি.এম. জুবায়ের বলেন, প্লেইন প্যাকেজিংয়ে সব তামাকপণ্যের প্যাকেট/কৌটার রং একই রকম হয়। প্যাকেট বা কৌটার আকার এবং শলাকার সংখ্যা কম থাকে। প্যাকেট/কৌটায় ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা এবং তামাকের ক্ষতিকর উপাদান সংক্রান্ত তথ্য মুদ্রণ বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট রং ও ফন্ট ব্যবহার করে পণ্যের নাম ও ব্র্যান্ড লিখতে হয়। কোম্পানির লোগো, রং কিংবা ব্র্যান্ড ছবি এবং কোনো প্রকার প্রচারণামূলক তথ্য মুদ্রণ করা যায় না।
২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় প্লেইন প্যাকেজিং চালু হওয়ার এক বছর পর অর্থাৎ ২০১৩ সালে দৈনিক ধূমপায়ীর হার ১৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৮ শতাংশে নেমেছিল।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্লেইন প্যাকেজিং চালু হওয়ার পর তরুণদের মধ্যে সিগারেটের প্যাকেটের প্রতি আকর্ষণ দারুণভাবে কমে গেছে।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের মতে, জনস্বার্থে আইন ও বিধিমালা প্রণীত হলেও কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রনে আরও অগ্রগতি প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি পদক্ষেপে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ সব চ্যলেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, তামাকখাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায় তামাক ব্যবহারের কারণে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে তার দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। তামাকজনিত ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করলে তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৩ শতাংশ।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস