ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহীর (শারমিন আক্তার নীপা) স্বামী পরিচয় দেয়া শাহরিয়ার শাওনকে (২২) রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তাদের শাওন দাবি করেছে, ২০১৫ সালে রাজধানীর বাড্ডার কাজী অফিসে তার সঙ্গে মাহির বিয়ে হয়।
ডিবির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ডিবি দক্ষিণ বাড্ডার বাসা থেকে শাওনের কম্পিউটার জব্দ করেছে।
সূত্র জানায়, শাওনের কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে মাহী ও শাওনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে। শাওন স্বীকার করেছেন যে তিনিই মাহীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছেন। মাহীর অনুমতি নিয়েই তিনি এসব ছবি আপলোড করেন।
২০১৫ সালে বাড্ডার কাজী অফিসে বিয়ে করেন শাওন ও মাহী। সিনেমার শুটিং স্পটেও যেতেন শাওন। সিনেমার প্রযোজক-পরিচালক থেকে শুরু করে সবাই জানতেন মাহীর স্বামী শাওন।
উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একই ক্লাসের শিক্ষার্থী ছিলেন শাওন ও মাহী। ঐ সূত্র ধরে তাদের মধ্যে স্কুল জীবন থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কাগজপত্রও জিজ্ঞাসাবাদে ডিবির তদন্তকারী টিমের কাছে উপস্থাপন করেছেন শাওন।
গ্রেফতারকৃত শাওনের বাবার নাম নজরুল ইসলাম। তিনি গুলশানের একজন ব্যবসায়ী। শাওন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ২৮ মে (শনিবার) রাতে চিত্র নায়িকা মাহী উত্তরা পশ্চিম থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, শাহরিয়ার শাওন নামের এক যুবক ফেসবুকে তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আপলোড করেছে। অনুমতি না নিয়ে এসব ছবি প্রচার করায় তার সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে শাওন দাবি করেছেন কলেজ জীবনের শুরু থেকেই মাহীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। বিয়ের আগে থেকেই তাদের সম্পর্ক ছিল স্বামী-স্ত্রীর মতোই। এক সঙ্গে বিভিন্নস্থানে সময় কাটিয়েছেন তারা।
কলেজ জীবন থেকেই মডেল, অভিনেত্রী হওয়ার শখ ছিল মাহীর। চলচ্চিত্র নির্মাণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রধরে ২০১২ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরুর পরও তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। গত বছর থেকেই দূরত্ব সৃষ্টি হয় তাদের।
উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ২৮ মে রাতে সাইবার আইনে মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্ত করছে ডিবির সাইবার টিম।
ডিবি একজন কর্মকর্তা জানান, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আপলোড করার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মাহী-শাওন স্বামী-স্ত্রী হয়ে থাকলেও তাদের গোপন ছবি ফেসবুকে আপলোড করতে পারেন না। তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক আছে কী না সেটি দেখার বিষয় নয়।
অন্যদিকে, শাওনের কয়েকজন বন্ধু অভিযোগ করেছেন, ডিবি পুলিশের কয়েক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে মাহীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে স্প্ল্যাশ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নামে একটি সিনেমার শুটিংয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা অভিনয় করছেন। এই সিনেমার নায়িকা মাহী। এই ছবির শুটিংয়ের সূত্র ধরে ওইসব কর্মকর্তার সঙ্গে মাহীর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তারাই এখন শাওনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস