খুলনা জেলার ঐতিহ্যবাহি ফুলতলা বাজারের ফেরিফেরিভূক্ত হাটের জমিতে অবৈধভাবে দখলদাররা সরকারি নির্দেশ অমান্য করে তোহা বাজারে জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য জমিতে ফাঁকা পিলার দিয়ে ঘর নির্মান করে ব্যবসা বাণিজ্য করছে। এবং ভাড়া দিয়ে অবৈধভাবে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ফুলতলা বাজারের ইজারাদার ও সাব ইজারাদারগণ নিজেদেরকে হাট মালিক পরিচয় দিয়ে ফুলতলা হাটের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে একতলা, দোতলাসহ বহু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট নির্মান করেছে। সরকার বিভিন্ন সময় অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে অজ্ঞাত কারণে থেমে যায়।
বিগত ১/১১ তত্ববধায়ক সরকারের আমলেও বাংলাদেশের অধিকাংশ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করলেও রহস্যজনক কারণে ফুলতলা বাজারে ধীর গতি অবলম্বন করা হয়। পরবর্তীতে তত্ববধায়ক সরকারের বিদায়ের পর উক্ত অবৈধ দখলদার, ভূমিদস্যুগণ বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ফুলতলায় হাটের জমি দখলের মহাউৎসব শুরু করে। তাদের কাছে যেন স্থানীয় প্রশাসন সম্পূর্ণ অসহায়।
সম্প্রতি দেখা গেছে, ওইসব ভূমিদস্যু বিশেষ মহলের প্ররোচনায় ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকারের হাটের জমিতে অবৈধ ঘর নির্মান করেছে। স্থানীয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মৌখিকভাবে ও লিখিত নোটিশের মাধ্যমে ভূমি দখলকারীদের সরকারি হাটের জমিতে ঘর নির্মানে বিরত থাকার প্রানান্তকর চেষ্টা করলেও তাদের ঠেকাতে পারে নাই। তিনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে প্রদর্শনে আসলে বিষয়টি রহস্যজনকই থেকে যায়। অবৈধ দখলদারদের পাকা ঘর নির্মানের ফলে ফুলতলা হাটে কোন তোহা বাজার নির্মানের জন্য জায়গা নেই। চান্দিনাগুলিও কতিপয় ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে। রাস্তার উপর হাট বসার ফলে সাধারণ পথচারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরাও ধানচাল, গরু-ছাগল, তরি-তরকারী নিয়ে বাজারে ঢুকতে পারে না। রাস্তার উপর দাড়িয়ে বেচাকেনা করতে হয়। ফলে জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগের অন্ত নেই।
এ ব্যাপারে কথা হয় সদর ফুলতলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মোল্যা আলমগীর হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সপ্তাহে প্রতি রবিবার ও বুধবার ফুলতলা বাজারের হাট বসে। অবৈধ দখলদারদের কারণে বাজারে সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। অবিলম্বে এই সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে বাজারের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, তোহা বাজারের চান্দিনায় দুই লাইনে ২০ জন ব্যবসায়ীর বসার নিয়ম থাকলেও গুটি কয়েক লোক তা দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য অবাদে চালিয়ে যাচ্ছে। এবং ফুটপাত থেকেও অতরিক্তি টাকার বিনিময়ে ভাড়া বসিয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া বাজার সংলগ্ন ফুলতলা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের চারিপাশে দোকান ঘর, অবৈধ জমি দখল করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী দিনের পর দিন রাস্তা উপর দেদারছে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমি মালিকেরা খাজনা দিতে আসলে বিড়ম্বনায় পড়ে।
এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন নায়েব মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ১২জনকে নোটিস দিয়েছি। বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে। তবে ফুলতলা বাজারকে রক্ষা করতে হলে, ভূমি দখলদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
সানবিডি/ঢাকা/আহো