ফের বাড়ল ভারতীয় চালের রফতানি মূল্য

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৭-১৯ ০৮:৫০:৫২


চলতি সপ্তাহে আরো এক দফা বেড়েছে ভারতীয় চালের রফতানি মূল্য। এ নিয়ে টানা সাত সপ্তাহ শস্যটির বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে ভারতীয় চালের রফতানি মূল্য পাঁচ বছরের সর্বোচ্চে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

বর্তমানে ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক। বৈশ্বিক চাল রফতানিতে ৪০ শতাংশ অবদানই ভারতের। ২০২২ সালে দেশটি ৫ কোটি ৬০ লাখ টন চাল রফতানি করে। তবে চলতিসহ আগামী বছরগুলোয় রফতানি নিম্নমুখী হয়ে উঠতে পারে। উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভাঙা চাল রফতানি বন্ধ করে দেয়। তার ওপর অন্যান্য চাল রফতানিতে আরোপ করা হয় ২০ শতাংশ শুল্ক। এবার দেশটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় সব ধরনের চাল রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে। এ খবর প্রকাশের পরই ভারতীয় চালের রফতানি মূল্য আরো এক দফা বেড়ে যায়।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, ভারতের সরকারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশটিতে চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকার সব ধরনের বাসমতি ছাড়া অন্যান্য চাল রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সরকারসংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত রফতানি বন্ধ ঘোষণার কোনো প্রস্তাব আসেনি। নয়াদিল্লি চালের বাজারদর ওঠানামার ওপর খুব ভালোভাবে নজর রাখছে। চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ উৎপাদন পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তখন পরিস্থিতি বিবেচনায় রফতানির ওপর আরোপিত সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া কিংবা নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

চলতি সপ্তাহে ভারত প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চাল ৪২১-৪২৮ ডলারে বিক্রি করছে। গত সপ্তাহে একই চাল বিক্রি হয়েছিল ৪১২-৪২০ ডলারে। সে হিসাবে চালের দাম ২০১৮ সালের এপ্রিলের পর সর্বোচ্চে।

ভারতীয় চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণ রাও জানান, কৃষকদের চাল উৎপাদনে উৎসাহিত করতে সরকার ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে স্থানীয় ও রফতানি বাজারে চালের দামও বেড়েছে।

এদিকে থাইল্যান্ডে চালের রফতানি মূল্য অপরিবর্তিত। চলতি সপ্তাহে দেশটি প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫১৫ ডলারে রফতানি করছে। খরার প্রভাব এড়াতে অফ সিজনে কৃষকদের ধান আবাদ না করার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির সরকার।

ভিয়েতনাম চলতি সপ্তাহে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫১০-৫১৩ ডলারে রফতানি করছে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৫০০-৫১০ ডলার।

চালের বৈশ্বিক বাজারদর বর্তমানে ১১ বছরের সর্বোচ্চে। আগামী মাসগুলোয় শস্যটি আরো ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে। এদিকে শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলোয় এল নিনোর প্রভাবে অন্যান্য শস্য উৎপাদনও ঝুঁকির মুখে। ফলে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় এসব শস্যের দামও চড়া হয়ে উঠতে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত বছরই চালসহ সব ধরনের শস্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। এ বছর নতুন করে যোগ হয় এল নিনোর আশঙ্কা। এ পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা মেটাতে রফতানিকারক দেশগুলোকে বিদ্যমান মজুদের ওপর নির্ভর করতে হবে। ফলে শিগগিরই চালের বৈশ্বিক মজুদ তলানিতে ঠেকতে পারে।

এনজে