ভারত রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পরই অস্থিতিশীল চালের বাজার। সরবরাহ সংকটের আশঙ্কার পাশাপাশি অব্যাহত বাড়ছে শস্যটির দাম। চলতি সপ্তাহে বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়ে ১৫ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চালের উৎপাদন। ফলে অস্থিরতা আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। খবর আরটি।
থাই রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্যমতে, থাইল্যান্ডে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চালের রফতানিমূল্য বেড়ে ৬৪৮ ডলারে পৌঁছেছে। ২০০৮ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ দাম। ভারত বাসমতি বাদে অন্যান্য চালের ওপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণেই শস্যটির বাজারদরে এমন উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে।
ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক। জুলাইয়ের শেষ দিকে দেশটি বাসমতি ছাড়া সব ধরনের সাদা চালের ওপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সে সময় দেশটির সরকার জানায়, স্থানীয় বাজারে চালর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতেই মূলত এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অক্টোবরের পর থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত ভারতে চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, স্থানীয় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতের এ উদ্যোগ বিশ্ববাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় প্রধান খাদ্যশস্য চাল। এর সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন করে থাইল্যান্ড থেকে চাল সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। শস্যটি রফতানিতে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। কিন্তু এল নিনো ও ভয়াবহ খরার আশঙ্কায় দেশটির সরকার চালের পরিবর্তে অন্য ফসল উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কম পানি ব্যবহার করতে হয় এমন ফসলের উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহিত করা হচ্ছে তাদের। বর্তমানে আবহাওয়া পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অন্য অঞ্চলগুলোয় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসতে পারে। ফলে চাল উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের উত্তরাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে পাঞ্জাব ও হরিয়ানাসহ কয়েকটি রাজ্যে নতুন রোপণ করা ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেক এলাকার কৃষককে আবার ধান রোপণ করতে হয়েছে। বিশ্বজুড়ে চাল সরবরাহের প্রায় ৯০ শতাংশের ভোক্তা এশিয়া। এল নিনো ফিরে আসায় এ অঞ্চলের দেশগুলোয় চালের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাবে লাগামহীন হয়ে পড়তে পারে শস্যটির বাজার।
এনজে