চীনে জুলাই মাসে অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন উৎপাদন এর আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। দক্ষিণ চীনের তাংসেন শহর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশে ইস্পাত উৎপাদনে বিধিনিষেধের কারণে জাতীয় উৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। খবর রয়টার্স।
চীন বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক। জুলাইয়ে দেশটি ৯ কোটি ৮ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করে। জুনে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার টন। সে তুলনায় উৎপাদন কমলেও গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ওই দেশটির প্রপার্টি খাতে টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে ইস্পাতের চাহিদা কমে গিয়েছিল। ফলে এটির উৎপাদনে মুনাফা মার্জিনও নিচে নেমে আসে। এ কারণেই মূলত মিলগুলো উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, জুলাইয়ে চীনে প্রতিদিন ২৯ লাখ ৩০ হাজার টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল। জুনে দৈনিক উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩০ লাখ ৪০ হাজার টন। সে হিসাবে উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ওই সময় প্রতিদিন উৎপাদন হয়েছিল ২৬ লাখ ৩০ হাজার টন।
জিয়াংশু ফুশি ডাটা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক চাই ইয়ুংজেং বলেন, ‘এক মাসের ব্যবধানে ইস্পাত উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ বিধিনিষেধ। তাংসেন শহরে বিধিনিষেধে কারণে ২০ জুলাইয়ের পর উৎপাদন একেবারেই তলানিতে নেমে আসে।’
বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মাইস্টিল জানায়, তাংসেন চীনের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদন হাব। জুলাইয়ের শেষ দিকে সেখানে ইস্পাত উৎপাদনে আরো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। অনেক মিলকে জুলাইয়ের শেষ নাগাদ অন্তত একটি ব্লাস্ট ফার্নেসের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। ফলে ব্লাস্ট থেকে তরল ইস্পাত উৎপাদন প্রায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার টন কমেছে।
তাংসেন শহরের স্থানীয় প্রশাসন মিলগুলোকে জুলাইয়ে উৎপাদন ৩০-৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার নির্দেশনা দেয়। উদ্দেশ্য বাতাসের দূষণের পরিমাণ কমিয়ে আনা। মূলত এ কারণেই শহরটিতে ইস্পাত উৎপাদন কমেছে।
এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশের অনেক মিল বিদ্যুতের স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত মাসে ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এছাড়া অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে অনেক ইলেকট্রিক আর্ক ফার্নেস মিল উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে চীন ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
এনজে