বন্ধ হয়ে যাবে বিগ বেন!
প্রকাশ: ২০১৫-১০-১৯ ১৫:৫৯:২৬
টানা ১৫৬ বছর ধরে লন্ডনবাসীকে সময় জানিয়ে আসছে বিগ বেন। বয়সের ভারে বিশাল এ ঘড়ির ভেতরের কল-কাব্জাগুলো বেশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এখনই বিগ বেনের সংস্কার করা না হলে এটি শিগগির নীরব হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিষেশজ্ঞরা।
আজ সোমবার ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী চার মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চতুর্মুখী এই ঘড়ি বিগ বেনকে। এসময়ের মধ্যে তাকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করবে প্রকৌশলীরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢং..ঢং..ঢং..। আগামী চার মাসের জন্য ‘চুপ’ হয়ে যাচ্ছে লন্ডনের বিগ বেন। লন্ডনবাসীকে আর সময়ের জানান দেবে না সে। বয়স হয়েছে যে! কল-কব্জাগুলোও বেশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। তাই জরুরি তলব পড়েছে শিগগিরই বেন-কে সারিয়ে তুলতে হবে। ওর চিকিত্সকরা সতর্ক করেছেন, বেন-কে সারিয়ে না তুললে সারা জীবনের জন্য নীরব হয়ে যাবে সে।
১৮৫৮ সালে গর্বের প্রতীক হিসাবে লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে বিগ বেনকে দাঁড় করানো হয়। একে এলিজাবেথ টাওয়ারও বলা হয়ে থাকে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চতুর্মুখী এই ঘড়ি ব্রিটেনের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে। লন্ডনে ঘুরতে গেলে বিগবেন-কে দর্শন করবেন না বা করেননি, এমন পর্যটক খুব কমই আছেন। এখান থেকেই লন্ডনবাসী নতুন বর্ষকে আহ্বান জানায়।
সেই ১৮৫৮ সাল থেকে কত পরিবর্তনের সাক্ষী রয়েছে সে। বছরের বছরের পর ধরে সময় দিয়েছে লন্ডনবাসীকে। আজ সে জরাজীর্ণ। যে ঐতিহ্য ও গর্ব এত দিন ধরে বয়ে নিয়ে আসছিল, হঠাৎ করে তার নিশ্চুপ হয়ে যাওয়ার খবরে প্রশাসন মহল থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে হাহাকার পড়ে গিয়েছে।
কী হবে তা হলে? সবার মুখে এখন এই প্রশ্ন ঘুরছে। বিগ বেন-কে সারিয়ে তুলতে খরচও কম নয়। প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করতে হবে ওকে সুস্থ করতে। তারা আবার দেখেশুনে পরীক্ষা করে বলেছেন, বেন-এর নাকি ‘ক্রনিক প্রবলেম’ দেখা গিয়েছে। পেন্ডুলাম, বিয়ারিং— সবই ধীরে ধীরে হাল ছাড়তে বসেছে। ১৫৬ বছর ধরে টানা সময়কে ধরে রেখেছে সে। এখনই যদি তার সু-চিকিত্সার বন্দোবস্ত না করা হয় তা হলে আর জাগানো যাবে না বেনকে। দৈত্য ঘড়ি ঘুমের অতলে চলে যাবে চিরতরের জন্য।
লন্ডনবাসীরা চান না বেন-কে হারাতে। সরকারেরও কিয়দংশে একই মত। বিশ্বে যাতে লন্ডনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ না হয় সে কারণেই বেন-এর চিকিত্সায় কোমর বেঁধে নেমেছে তারা।