চলতি বছর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপথে রেকর্ড পরিমাণ কয়লা রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া জ্বালানিটির বৈশ্বিক উত্তোলন ও ব্যবহার ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর অয়েলপ্রাইসডটকম।
সংস্থাটি জানায়, বিশ্বজুড়ে কয়লাসহ অপরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার তোড়জোড় চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো। এর পরিবর্তে পরিচ্ছন্ন সবুজ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়াসও চলছে। কিন্তু এর পরও কয়লার ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে পারছে না বিশ্ব। উল্টো অনেক দেশ আরো বেশি পরিমাণে কয়লা ব্যবহারে ঝুঁকছে।
আইইএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সমুদ্রপথে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ কয়লা রফতানি হয়েছিল। রফতানির পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি ১০ লাখ টন। চলতি বছর রফতানি ওই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৩৩ কোটি ৫০ লাখ টনে। শিপ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান বিআরএস জানায়, এ বছরের প্রথমার্ধে কয়লার রফতানি চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোয় কয়লার ব্যবহার কিছুটা কমার লক্ষণ দেখা গেছে। তবে বিশ্বজুড়ে পরিস্থিতি একদমই উল্টো, বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোয় এটির উত্তোলন, ব্যবহার ও চাহিদা সমানতালে বাড়ছে। ফলে বৈশ্বিক চিত্রও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে। গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের জন্য এটি খারাপ খবর। অবশ্য কয়লাবাহী ড্রাই বাল্ক জাহাজ মালিকদের জন্য বিষয়টি ইতিবাচক।
আইইএর প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর কয়লার চাহিদা ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টনে উন্নীত হতে পারে। এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ চাহিদা। প্রতি চার টন কয়লার তিন টনই ব্যবহার হবে চীন, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয়। বৈশ্বিক ব্যবহারের ৫৬ শতাংশই হবে চীনে।
শিপ ব্রোকারেজ এসএসওয়াই জানায়, ইউরোপের দেশগুলো কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে আনছে। বিপরীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো হচ্ছে। উল্টো দিকে চীন ও ভারত কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আরো বাড়াচ্ছে।
এনজে