এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার হেড টু হেড পারফরম্যান্স লঙ্কানদের আগে থেকেই এগিয়ে রেখেছিল যোজন দূরত্বে। কিন্তু লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের আশা জাগাচ্ছিল সাম্প্রতিকসময়কার পাফরম্যান্স। পাশাপাশি ছিল ২০১৩ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো লঙ্কা বধের স্বাদ। কিন্তু সেই আশা শেষ পর্যন্ত ধূলিসাৎ হয়ে গেল বাজে ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ের কারণে।
এশিয়ার বিশ্বকাপ হিসেবে পরিচিত এশিয়া কাপের শুরুটা বাংলাদেশ করে লঙ্কানদের কাছে ৫ উইকেটে হেরে। বাংলাদেশের দেয়া ১৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৬৬ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে তরী ভেড়ায় শ্রীলঙ্কা।
পাল্লেকেলের পরিসংখ্যান বলছিল টসে জিতে বোলিং নেওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু ম্যাচের আগে থেকেই গলার কাঁটা হয়েছিল বৃষ্টির আশঙ্কা। যে বিপদ জেনেও ঝুঁকি নিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলপতি সাকিব আল হাসান। টসে জিতে নিয়েছিলেন ব্যাটিং।
কিন্তু সেই ঝুঁকি নেওয়াটা যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল সেটির প্রমাণ মেলে প্রথম ইনিংসেই। প্রথম ১০ ওভারে লঙ্কান বোলারদের টুটি চেপে ধরা বোলিংয়ে মাত্র ৩৪ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করতে সক্ষম হয় টাইগাররা। বিপরীতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের দুই ওপেনারের উইকেট তুলে নেয় শ্রীলঙ্কান বোলাররা।
দলীয় ৩৬ রানে একাদশতম ওভারে বিদায় নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।
তবে তৌহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় এড়িয়ে দলকে টেনে নেওয়ার গুরুভার কাঁধে তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিপর্যয় এড়িয়ে সচলও রাখেন দলের রানের চাকা।
কিন্তু উইকেটের অপরপ্রান্ত থেকে হৃদয় আর মুশফিকুর রহিম কিছুটা সাড়া দিলেও বাকিরা রীতিমতো মুখ ফিরিয়ে নেন তাকে সাপোর্ট দেওয়া থেকে।
তবে হাল না ছেড়ে একাই লড়াই চালিয়ে যান শান্ত শক্তহাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্ষান্তি দিতে হয় তাকেও। সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে থাকতেই মাহেশ থিকসিনার শিকার বনে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
আর তাতেই শেষ হয়ে যায় সব আশা ভরসার। বাংলাদেশকে থেমে যেতে হয় ১৬৪ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম চার ওভারেই দুই ওপেনারকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের তৃতীয় ও ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে দিমুথ কারুনারত্নের ব্যাট প্যাডের মাঝখান দিয়ে স্টাম্প উড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। সেই ওভারটি উইকেট মেইডেন যায় তার।
উইকেট তুলে নেওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েননি শরিফুলও। পরের ওভারের তৃতীয় বলটি শর্ট ওয়াইড লেন্থে করেন তিনি। আর সেটিতে ধরাশায়ী হন পাথুম নিশাঙ্কা।
দ্রুত দুই উইকেট পতনের রেষ কাটাতে আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ইঙ্গিত দেন সামারাউইক্রিমা ও কুশাল মেন্ডিস। দুজনে মিলে সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে।
তবে দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে সেই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ২১ বলে ৫ রান করা মেন্ডিসকে দেখিয়ে দেন সাজঘরের পথ।
কিন্তু তাতেও টাইগাররা বদলে দিতে পারেনি ম্যাচের দৃশ্যপট। সামারাউইক্রিমা ও চারিথ আশালাঙ্কার দায়িত্বশীল ব্যাটে ভর করে লঙ্কানরা এগিয়ে যেতে থাকে জয়ের দিকে।
শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের ৫ উইকেট তুলে নিলেও পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬৬ বল হাতে রেখেই জয় বাগিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলঙ্কা।
এএ