রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের মধ্যে গ্যাস আমদানি কমেছে জার্মানির। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রথম আট মাসে বার্ষিক ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ আমদানি কমেছে দেশটির। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে ইউটিলিটি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বিডিইডব্লিউ। গত বছরের সরবরাহ সংকটের পর থেকে জার্মান সরকার গ্যাস সংরক্ষণ ও ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। খবর রয়টার্স।
বিডিইডব্লিউ সাপ্তাহিক ডাটা বলছে, ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে গত আট মাসে ৪০ হাজার ৫০০ কোটি কিলোওয়াট ঘণ্টা আমদানি করা হয়েছে, যা ২০২২ সালের একই সময়ের ৪৯ হাজার ৪০০ কোটি কিলোওয়াট ঘণ্টা আমদানির তুলনায় বেশি।
বিডিইডব্লিউ শীতকালে সাপ্তাহিক আপডেট দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। কেননা অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া শীত মৌসুমে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যায়। মানুষজন বাসা উষ্ণ রাখতে গ্যাস জ্বালিয়ে রেখে তাপ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি শিল্প খাতেও এ মৌসুমে গ্যাসের অধিক ব্যবহার হয়। ফলে সরবরাহ সংকটে পড়ে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিরোধিতার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের আগস্টে রাশিয়ান গ্যাস আমদানি হঠাৎ করেই বন্ধ হয় যায়। ফলে অন্যান্য উৎস থেকে বেশি করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে অভাব মেটাতে হয়। এতে গ্যাসের দাম বেড়ে যায় এবং বিকল্প উৎস থেকে হঠাৎ করে এত বিপুল পরিমাণ গ্যাস আমদানি করতে হিমশিম খায় রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলো।
বিডিইডব্লিউর তথ্য বলছে, বাড়তি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে বেশির ভাগ গ্যাস আমদানি করা হয়েছে নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডস থেকে। আগস্টে নরওয়ে থেকে ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ, নেদারল্যান্ডস থেকে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০ দশমিক ৩ শতাংশ এলএনজি আমদানি করা হয়েছে বেলজিয়াম থেকে। জার্মানির নিজস্ব তিনটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে এসেছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ গ্যাস।
২০২২-২৩ সালের ছয় মাসের শীতকালীন গ্যাস মৌসুমে ব্যবহারকারীরা ১৬ শতাংশ সাশ্রয় করেছেন। এছাড়া মাঝারি মানের আবহাওয়ার কারণে গ্যাসের চাহিদা কম থাকায় কঠিন পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করেছে।
বিডিইডব্লিউ উল্লেখ করেছে, জার্মানির ভূগর্ভস্থ গ্যাস ট্যাংকগুলো বর্তমানে ৯৩ দশমিক ৯ শতাংশ পূর্ণ রয়েছে, যা আগামী তিন মাসের চাহিদা মেটাবে। ১ অক্টোবরের মধ্যে ট্যাংকগুলো ৮৫ শতাংশ এবং নভেম্বরের মধ্যে ৯৫ শতাংশ পূর্ণ রাখার সরকারি নির্দেশনার আগেই তা বাস্তবায়িত হয়েছে।
ম্যানেজিং ডিরেক্টর কারস্টিন আন্দ্রেই জোর দিয়ে বলেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার এখন জরুরি, যদিও মজুদের তথ্য আমাদের আশ্বস্ত করছে। তবে আমাদের আসন্ন শীতকালের চাহিদা ভালোভাবে মিটবে কিনা সে ব্যাপারে আমরা এখনো শতভাগ নিশ্চিত নই।
এনজে