৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে ভারতের চা উৎপাদন

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৯-০৪ ১০:৪৮:৩৯


জুলাইয়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ভারতের চা উৎপাদন বেড়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার কেজিতে। গত বছরের একই সময় যা ছিল ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৯০ হাজার কেজি। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের প্রায় সব প্রদেশে উৎপাদন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় প্রবৃদ্ধি এসেছে জাতীয় উৎপাদনে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।

এ বিষয়ে ভারতীয় চা বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, উত্তর ভারতে জুলাইয়ে চা উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১৪ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার কেজি। গত বছরের জুলাইয়ে ওই অঞ্চলে ১৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। এর মধ্যে আসাম উপত্যকায় উৎপাদন ৭ শতাংশ বেড়ে ৮ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার কেজি, চাচার অঞ্চলে ৮ শতাংশ বেড়ে ৫৩ লাখ ৪০ হাজার কেজি ও পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ২ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে, দার্জিলিং অঞ্চলে উৎপাদন প্রান্তিকভাবে কমে ১০ লাখ কেজিতে নেমেছে। হিমাচল প্রদেশের উৎপাদন বেড়ে ৪৫ লাখ ৬০ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়েছে।

দক্ষিণ ভারতের মধ্যে তামিল নাড়ুতে উৎপাদন ১১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৬৪ লাখ ২০ হাজার কেজিতে এবং কেরালায় ৫২ লাখ ২০ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়েছে। কর্ণাটকে উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে।

বৃহৎ বাগানগুলোয় উৎপাদন ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে ৮ কোটি ৯ লাখ ৯০ হাজার কেজিতে পৌঁছেছে। ক্ষুদ্র বাগানগুলোর উৎপাদন ৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার কেজিতে।

শ্রেণীভেদে সিটিসি চায়ের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার কেজিতে। এর মধ্যে উত্তর ভারতে ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার এবং দক্ষিণ ভারতে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার কেজি উৎপাদন হয়েছে। অর্থডক্স চায়ের উৎপাদন হয়েছে উত্তর ভারতে ৯৯ লাখ এবং দক্ষিণ ভারতে ৩৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি।

চলতি বছরের জুনের তুলনায় দেশটিতে মোট চা উৎপাদন ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময় ভারতে মোট ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল।

চলতি বছর ভারতের চা রফতানি ১০ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির রফতানিকারকরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরোপ ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোয় চাহিদা কমে যাওয়াসহ নানা প্রতিবন্ধকতাই এর মূল কারণ। চলতি বছর রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ফেরাতে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন দেশটির রফতানিকারকরা। গত বছর ভারতের চা রফতানি ১৮ শতাংশ বেড়েছিল।

২০২২ সালে শ্রীলংকায় নিম্নমুখী উৎপাদনে লাভবান হয়েছিল ভারত। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির পিছিয়ে পড়ার সুযোগে ভারত রফতানি বাড়াতে সক্ষম হয়। তবে এ বছর শ্রীলংকার চা রফতানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে রফতানি কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণেও রফতানি কমতে পারে।

ভারতীয় চা রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া বলেন, ‘‌ভারতীয় চায়ের প্রথাগত বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম ইরান। দেশটির সঙ্গে নতুন রফতানি চুক্তি স্বাক্ষরসংক্রান্ত কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। ছয় মাস ধরে এ সমস্যা চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘‌২০ কোটি কেজি চার রফতানির লক্ষ্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। চলতি অর্থবছর পানীয় পণ্যটির রফতানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নেপাল থেকে সস্তা দামের চা আমদানিও রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’

চা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত সব মিলিয়ে ২২ কোটি ৮০ লাখ কেজি চা রফতানি করে।

এনজে