আওয়ামী লীগ সরকার তাদের চলতি ৩ মেয়াদে ৮২টি বেসরকারি এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে। অর্থাৎ গত ১৪ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এই ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে। রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টকে।
তিনি ৮২টি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামের তালিকা এবং তাদের দেওয়া ক্যাপাসিটি চার্জের তালিকা তুলে ধরেন।
মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৮২টি আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৭০টিকে ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান করতে হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত (৩০ জুন ২০২৩) ৭৬ হাজার ২৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে গত সাড়ে ১৪ বছরে সাত হাজার ৪৫৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ পরিমাণ চার্জ প্রাপ্ত অন্যান্য আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে মেঘনা পাওয়ার লিমিটেডকে ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকা, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে ৪ হাজার ৪ কোটি ৮ লাখ, সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডকে ৩ হাজার ৬৪৪ কোটি ৩৯ লাখ, সেমক্রপ এনডব্লিউপিসি লিমিটেডকে ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৬৬ লাখ, এপিআর এনার্জিকে ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ৪ লাখ, সিম্মিট বিবিয়ানা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি ৩ লাখ, হরিপুর পাওয়ার লিমিটেডকে ২ হাজার ৫৫৭ কোটি ৬৩ লাখ, ইউনাইটেড আশুগঞ্জ এনার্জি লিমিটেডকে ২ হাজার ৩৭৬ কোটি ৬৪ লাখ ও বাংলা ট্র্যাক পাওয়ার ইউনিট-১ লিমিটেডকে ১ হাজার ৮৫৩ কোটি ২২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
গত তিন মেয়াদে ৩২টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে (রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট) ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয়েছে ২৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস তার ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে ৬ হাজার ৪১১ কোটি ২২ লাখ টাকা পেয়েছে। এছাড়া অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টসকে (১৪৫ মে.ও) ২ হাজার ৩৪১ কোটি ২৮ লাখ, কেপিসিএলকে (ইউনিট-২) ১ হাজার ৯২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, সামিট নারায়ণঞ্জ পাওয়ার লিমিটেডকে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৮৫ মে.ও) লিমিটেডকে ১ হাজার ৫৫৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা, ডাচবাংলা পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডকে এক হাজার ৫৩০ কোটি ৯ লাখ টাকা, অ্যাক্রন ইনফ্রাস্টাকচার সার্ভিসেস লিমিটেডকে ১ হাজার ৪৮৪ কোটি ৩০ লাখ, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৯৫ মে.ও) লিমিটেডকে ১ হাজার ৪৩৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, দেশ এনার্জি সিদ্দিরগঞ্জকে ১ হাজার ৩৯১ কোটি ২১ লাখ, ম্যাক্স পাওয়ার লিমিটেডকে ১ হাজার ৩০৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা কেরাণীগঞ্জকে ১ হাজার ২৯১ কোটি ৬১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
এএ