ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী ফুটবলার পেলে ৫০ বছর ধরে যে রেকর্ডটা আগলে রেখেছিলেন, সেটা তার জীবদ্ধশায় কেউ ভাঙতে পারেনি। অনেক বড় বড় ফুটবলার এসেছিলেন ব্রাজিল ফুটবলে। কিংবদন্তির ছড়াছড়ি। কিন্তু ব্রাজিলের জার্সিতে পেলের ৭৭ গোলের রেকর্ড ছুঁতেও পারেননি কেউ। অথচ, এই কিংবদন্তির মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তাকে পেছনে ফেলে দিলেন নেইমার।
বলিভিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নেইমার। কাতার বিশ্বকাপের পর এই প্রথম জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তুললেন। খেলতে নেমেই গড়ে ফেললেন রেকর্ড। ৭৭ গোল নিয়ে এতদিন ছিলেন পেলের সমতায়।
এরপর খেলার ৬১তম মিনিটে গোল করে পেলেকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে এসে গোল করে নিজেকে তুলে নিলেন আরও উচ্চতায়। নেইমারের নামের পাশে এখন শোভা পাচ্ছে ৭৯টি আন্তর্জাতিক গোল।
বলা যায় মঞ্চ প্রস্তুত করাই ছিল নেইমারের জন্য। নিজ দেশের মাটিতে দর্শকভর্তি স্টেডিয়ামে কিংবদন্তি পেলের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভাঙার জন্যই মাঠে নেমেছিলেন নেইমার। যেহেতু পেলের সমান ৭৭ গোল ছিল নেইমারের। সে কারণে, একটি গোল করলেই রেকর্ডটা গড়ে ফেলবেন, এটা ছিল অবধারিত।
সেই রেকর্ড হতে পারতো প্রথমার্ধে। যদি না তিনি পেনাল্টি মিস করতেন। তবে কাঙ্খিত গোলটি পেতে ৬১ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। এরপর দারুণ এক গোলে যখন স্কোরশিটে নিজের নাম তুললেন, সঙ্গে সঙ্গে পেলেকে টপকে ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেলেন নেইমার।
কাতার বিশ্বকাপেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পেলেকে ছুঁয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। ওই ম্যাচে যদি টাইব্রেকারে হেরে ব্রাজিলের বিদায় না ঘটতো, তাহলে বিশ্বকাপেই পেলের রেকর্ডটা ভেঙে ফেলতেন তিনি। পেলেও দেখে যেতে পারতেন তার রেকর্ড ভেঙে নেইমারের নতুন রেকর্ড গড়ার খেলাটা।
চোট নিয়ে শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বলিভিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামেন এই ফরোয়ার্ড। ১৭ মিনিটেই গোল করার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। পেনাল্টি নিতে বরাবরই দক্ষ তিনি। কিন্তু সেই নেইমারই নিলেন দুর্বল এক শট।
তাতে গোল আর রেকর্ড দুটো থেকেই বঞ্চিত হলেন এই সুপারস্টার। মাঝে বেশ কয়েকবার সুযোগ এসেছিল। সেটাও কাজে আসেনি।
অপেক্ষা করতে হয় ৬১ মিনিট। ডিবক্সের ভেতর অনেকটা জটলার মধ্যেই রদ্রিগোর পা ঘুরে বল আসে নেইমারের সামনে।
এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি। রাফিনহার ব্যাকপাস থেকে রদ্রিগোই শট নিতে চেয়েছেন, তবে শেষ মুহূর্তে বল ঠেলে দেন নেইমারের কাছে। দারুণ শটে দলের চতুর্থ এবং নিজের রেকর্ডগড়া গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এই পোস্টারবয়।
এরপর যোগ করা সময়ে আরো এক গোল করেন নেইমার। আর ব্রাজিল ম্যাচ জয় করে নেয় ৫–১ গোলে।
এনজে