‘ভালো রির্টানের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয়’
আপডেট: ২০২৩-০৯-০৯ ২০:০৭:৩৪
চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম জিয়াউল হক বলেছেন, বিমা কোম্পানিগুলোকে যেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কম সেখানে বিনিয়োগ করতে হয়। ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের প্রধান জায়গা হচ্ছে বন্ড। কিন্ত বন্ড থেকে যে আয় আসে সেটি খুবই অপার্যপ্ত। তাই ভালো রির্টানের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয়। চার্টার্ড লাইফ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে প্রায় ৬০ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিমা খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সদস্যদের জন্য আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হক’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন’র সঞ্চলনায় কর্মশালায় প্রধান বক্তা ছিলেন চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ।
সম্পূরক গ্রাহক বিমা পলিসিকে বিমার ভাষায় এফএনইটি বলে। একটি প্রতিষ্ঠান কোনো সেবার বিপরীতে গ্রাহকদের বিমা সুবিদা দিলে তাকে সম্পূরক গ্রাহক বিমা বা এফএনইটি বলে। মোবাইল অপারেটন গ্রামীণ ফোন, রবি এবং রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের এ ধরনের বিমা সুবিধা দিয়ে থাকে।
এস এম জিয়াউল হক জানান, আগে প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূরক গ্রাহক বিমা পলিসির ৯০ শতাংশ মিলভিক’র মাধ্যমে করতো। আর দেশিও বিমা কোম্পানিগুলো এ ধরনের বিমা পলিসি আসতো মাত্র ১০ শতাংশের মতো। নতুন প্রজম্নের বিমা কোম্পানিগুলো ব্যবসা শুরুর পর নতুন পণ্য নিয়ে এসে এ বাজারের বড় অংশই নিজেদের দখলে এনেছে। বর্তমানে সম্পূরক গ্রাহক বিমার ৭০ শতাংশই দেশিও বিমা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হচ্ছে।
দেশে বর্তমানে সম্পূরক গ্রাহক বিমার বাজার কতো? জানতে চাইলে এই মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আগে এই বিমার বাজার ছিলো ১০ কোটি টাকার মতো। এখন এর বাজার বেড়ে ৫০ কোটি টাকার মতো হয়েছে। বাজার বাড়ার পাশাপাশি দেশিও বিমা কোম্পানির অংশগ্রহণ বেড়েছে এটা ভালো লক্ষণ।
চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও এই কর্মশায় প্রধান বক্তা ছিলেন। তিনি বলেন, নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিমার বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। চার্টার্ড লাইফ তার বাজার সম্প্রসারণে নতুন বেশ কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। প্রতিনিয়তই সেসব প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ছে।
কর্মশালায় বিমা খাতের বিনিয়োগ, রিটার্ন এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তিন পর্বের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আইআরএফ সদস্যদের দিনের শুরুতে বিমা খাতের খুটিনাটি সম্পর্কে অবগত করেন এস এম জিয়াউল হক। এরপর কোম্পানিটির প্রধান ফাইন্যান্সিয়াল কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বিমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা দেন। শেষ পর্বে কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ চার্টার্ড লাইফের নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানান।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নতুন কোম্পানি হিসেবে আমাদের এখনও বড় ধরনের কোনো বিমাদাবি পরিশোধ করতে হয়নি। তবে ২০২৫ সালের পর আমাদের বেশিরভাগ পলিসির মেয়াদ শেষ হবে। তখন আমাদের দাবি পরিশোধে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন হবে। আমরা সেটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছি, যাতে চার্টার্ড লাইফ যে কোনো সময় স্বাচ্ছন্দে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারে।
অর্থনীতিতে বিমার অবদান বিষয়ে আরেক এক প্রশ্নের জবাবে চার্টার্ড লাইফের সিইও বলেন, আমাদের দেশে বিমার অবদান মাত্র ৫ শতাংশ। এই হার বাড়াতে হলে উন্নত দেশের ন্যায় ব্যাংকাসুরেন্সসহ আরো সাত আটটি চ্যানেলে পলিসি বিক্রি করতে হবে। নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য একমাত্র ইন্স্যুরেন্সই উপযুক্ত মাধ্যম। সার্বজনীন পেনশন বিমা প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে হলে এর সুফল বেশি পাওয়া যাবে।
কোম্পানিটির প্রধান ফাইন্যান্সিয়াল কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বিমা। তবে সে ক্ষেত্রে সকল কোম্পানিতে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকা জরুরি।
এছাড়া বিমার পলিসি থাকলে কর সুবিধা পাওয়া যায় এই তথ্যই অনেক নাগরিক জানেন না। বিমার সুবিধাগুলো সকল নাগরিকের কাছে পৌছি দিলে সবাই আগ্রহ পাবে বলে মনে করেন এই বিমা কর্মকর্তা।
কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ বলেন, বিমা দাবি পরিশোধের হার ৭০ শতাংশের বেশি। মাত্র দুই তিনটা কোম্পানির জন্য মার্কেটের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। যারা ভালো করছে তাদের বিষয়ে গণমাধ্যম ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে বিমা খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
এএ