বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজে সমূদ্রপৃষ্ঠ ৩৬৩৭ মিটার উচ্চতায় স্টেডিয়াম। নিঃশ্বাস নিতেই হাঁসফাস অবস্থা। আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের অক্সিজেন টিউব নিয়েই লা পাজে যেতে দেখা গেছে। এত উচ্চতায় আর যাই হোক, সমতলের মানুষ ফুটবল খেলতে পারে না। পারলেও সেটা হয় রীতিমত অক্সিজেন নেয়ার যুদ্ধ। সেখানে ফুটবল খেলাটা কিভাবে হবে!
শুধু তাই নয়, বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন না লিওনেল মেসিও। ইনজুরি শঙ্কার কারণে তাকে ছাড়াই দল সাজাতে হয়েছে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। সব মিলিয়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে কঠিন পরীক্ষারই মুখোমুখি হতে হলো।
কিন্তু সব পরীক্ষা নিমিষেই পার হয়ে গেলো আর্জেন্টিনা। মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচে স্বাগতিক বলিভিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।
লিওনেল মেসি না থাকলেও তার অনুপস্থিতিকে বুঝতেই দেননি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। দলের নেতৃত্বভার নেয়ার পাশাপাশি খেলার কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হয়েছিলেন তিনি। পুরো মাঠে তার পদচারণা। খেলালেন, গোল করালেন। তাতেই সব প্রতিন্ধকতা জয় করে ঘরে ফিরতে যাচ্ছে লা আলবিসেলেস্তারা।
আর্জেন্টিনার হয়ে গোল তিনটি করেন এনজো ফার্নান্দেজ, নিকোলাস তালিয়াফিকো এবং নিকোলাস গঞ্জালেজ।
ম্যাচ শেষে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ডি মারিয়া আর্জেন্টাইন মিডিয়া টিওয়াইসি স্পোর্টসকে বলেন, ‘মাত্র দুই ম্যাচ গেলো। আমরা জানতাম, ৬টা পয়েন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো যেভাবেই আসুক না কেন। বিশ্বের সেরা ফুটবলারের অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পরতে পেরেছি, নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এটা যেন আমার জন্য অবিশ্বাস্য একটি অনভূতি।’
ম্যাচের প্রথম আধঘণ্টা গোল হয়নি। আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা পুরোপুরি প্রভাব বিস্তার করেও গোল বের করতে কষ্ট হচ্ছিলো। ৩১তম মিনিটে গিয়ে প্রথম বলিভিয়ার গোলের তালা খোলেন এনজো ফার্নান্দেজ। ডি মারিয়ার ক্রস থেকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকে শট করে বলিভিয়ার জালে বল জড়ান চেলসির এই তারকা।
৩৯তম মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বহিস্কার হন রবার্ট ফার্নান্দেজ। ৪২তম মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নিকোলাস তালিয়াফিকো। ৮৩তম মিনিটে এই ব্যবধান আরও বাড়ান নিকোলাস গঞ্জালেজ।
ম্যাচ শেষে এনজো ফার্নান্দেজ বলেন, ‘আমার নিঃশ্বাস নিতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছিলো। উচ্চতা অনেক বেশি। তবে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছি। ম্যাচটাতেও খুব কষ্ট হচ্ছিলো আমাদের। সময় যত গড়াচ্ছিলো, তত যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। তবে, গোল করতে পেরে, দলকে জেতাতে পেরে খুব ভালো লাগছে এখন।’
এনজে