২০২৩-২৪ মৌসুমে কমতে পারে বৈশ্বিক কফি উৎপাদন

সানবিডি২৪ আপডেট: ২০২৩-০৯-১৭ ০৯:২৬:৩৫


বিশ্বজুুড়ে আগামী ২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুমে বিশ্বজুড়ে কফি উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে এ সময় চাহিদা থাকবে নিম্নমুখী। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোয় চাহিদা অনেক বেশি দুর্বল হয়ে আসতে পারে। ফলে উৎপাদন কমলেও সরবরাহ ঘাটতিতে পড়বে না বাজার। রাবোব্যাংক সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বছরের অক্টোবরে ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরু হয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। ডাচ্‌ ব্যাংকটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, এ সময় বৈশ্বিক কফি উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৭ কোটি ২৬ লাখ ব্যাগে (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি), যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় ১৬ লাখ ব্যাগ কম। কলম্বিয়া ও ভিয়েতনামে উৎপাদন কমার আশঙ্কা থেকেই মূলত বৈশ্বিক উৎপাদন নিম্নমুখী হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আগের পূর্বাভাসে কলম্বিয়ায় ১ কোটি ৩৬ লাখ ব্যাগ কফি উৎপাদনের কথা জানিয়েছিল রাবোব্যাংক। নতুন পূর্বাভাসে তা কমিয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যাগ নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভিয়েতনামে উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ব্যাগ, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় ৫ লাখ ব্যাগ কম। উভয় দেশেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে রাবোব্যাংক।

তবে এ মৌসুমে পানীয় পণ্যটির ভারসাম্যপূর্ণ বৈশ্বিক সরবরাহের প্রাক্কলন করেছে ব্যাংকটি। যেসব দেশে কফি উৎপাদন হয় না সেসব দেশে নিম্নমুখী চাহিদার কারণেই সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাবোব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কফির বৈশ্বিক আমদানি চাহিদা ছিল অনেক কম। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যে চাহিদা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এর মধ্য দিয়ে আমদানি ১৫ বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে।

চলতি বছর রোবাস্তা কফির বৈশ্বিক দাম ব্যাপক বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। গত বছরের তুলনায় দাম বাড়তে পারে প্রায় ২৮ শতাংশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রধান কফি উৎপাদক দেশগুলো বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে লম্বা সময় ধরেই লড়ছে। তার ওপর নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এল নিনো। ফলে কফির বৈশ্বিক উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমছে। এ কারণেই পানীয় পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জরিপে দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ রোবাস্তা কফির গড় দাম টনপ্রতি ২ হাজার ৩০০ ডলারে উন্নীত হতে পারে, যা গত বছরের শেষ সময়ের তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি। এশিয়ার দেশগুলোয় এরই মধ্যে এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে এসব দেশে কফি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন পরিস্থিতি বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

রাবোব্যাংকের বিশ্লেষক কার্লোস মেরা বলেন, ‘‌ভিয়েতনাম বিশ্বের শীর্ষ রোবাস্তা কফি উৎপাদক। দেশটিতে কফি উৎপাদনের জন্য উন্নত সেচ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন বৃষ্টিপাতের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই শুষ্ক আবহাওয়া সেখানকার উৎপাদন পরিস্থিতির জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’

২০২৩-২৪ মৌসুমে ভিয়েতনামে ২ কোটি ৯৬ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) রোবাস্তা উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা ২০২২-২৩ মৌসুমের তুলনায় কিছুটা কম। মার্কিন কৃষি বিভাগ জানায়, ২০২২-২৩ মৌসুমে দেশটিতে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ব্যাগ কফি উৎপাদন হয়েছিল।

এনজে