বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশি নিদিষ্ট কিছু পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সবিধা দেওয়ার উপায় খোঁজা হবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) সপ্তম কাউন্সিলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব।
জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আজকে আমাদের বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সপ্তম টিকফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে অনেকগুলো এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ সাইড থেকে আমরা আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্য যাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় সে বিষয়টা জোরালোভাবে তুলে ধরেছি। বিশেষ করে আমরা বলেছি, আমরা আমেরিকা থেকে ১৪ শতাংশ তুলা আনি। এই কটন দিয়ে যে পোশাক তৈরি হবে এবং সেই পোশাক যখন আমেরিকায় রপ্তানি হবে তখন শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে হবে। এ বিষয়টি তারা নোট করেছে এবং আমাদের যুক্তিগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। তারা বলেছে এ বিষয়ে কোনো সুবিধা দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা করবেন। উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করবেন।
তিনি বলেন, শুল্কমুক্ত যে সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের সে বিষয়ে আমরা বলেছি- পৃথিবীর সব উন্নত ও অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। আমেরিকাই শুধু দিচ্ছে না। আমরা বলেছি গত ১০ বছরে আমরা অনেক উন্নতি করেছি তাদের যে কনসার্ন ছিল লেবার রাইটসসহ অন্যান্য ইস্যুতে। সুতরাং ডব্লিউটিতে যে আলোচনা হচ্ছে সেখানে আমরা আমেরিকার সমর্থন কামনা করছি। তারা বলেছেন জেনেভায় তাদের ও আমাদের যে মিশন আছে সেখানে একসাথে কাজ করছেন। তারা বিষয়টি দেখবেন।
বৈঠকে আমেরিকার সাইড থেকে কি বলা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তপন বলেন, তারা লেবার রাইটস প্রশ্নে আলোচনা করেছেন। যেটা অন্যান্য সময়ও আলোচনা করে থাকেন। আমাদের যে লেবার ইউনিয়ন, ইনস্টিটিউশন প্রসেস সম্পর্কে তারা সন্তুষ্ট। যেটা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে। এর বাইরে মেধাস্বত্ত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়ে যাচ্ছে। তাই মেধাস্বত্ত সম্পর্কিত যে আইন রয়েছে সেগুলো বিশ্বমানের হতে হবে।
আমরা বলেছি, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অনেকগুলো আইন সংশোধন করেছে। তবে তারা আইনের বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন। আমরা বলেছি, আইন বাস্তবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সব সময় চেষ্টা করছি আরও উন্নতি করার। ভবিষ্যতে তাদের টেকনিক্যাল সহযোগিতা প্রয়োজন হতে পারে। সেখানে তারা সম্মত হয়েছেন।
এর বাইরে গ্লোবাল ফাইনালন্সিয়াল কর্পোরেশন (জিএফসি) নামে একটি ফান্ড আছে। যেটা গতবছর ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলারের। সেখান থেকে স্বল্প উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় সাপোর্ট আকারে দেওয়া হয়। সেই ফান্ডে যাতে বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। তারা বলেছে, এখানে যে শর্ত মানতে হয় সেটা আর জিএসপির শর্ত একই। এজন্য তারা আমাদেরকে দ্রুত শ্রম আইন সংশোধনের কথা বলেছে। এসব বিষয়ে উন্নতি করতে পারলে তারা আমাদেরকে জিএফসি ফান্ডের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করবে।
এএ