শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার কাউকে ভোট দিতে দেয় না। সব কিছু জোর করে কেড়ে নেয়। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশ যখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে, তখন সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে যাচ্ছে। কিসের সংবিধান, যেটা তোমরা কাটাছেঁড়া করে শেষ করে দিয়েছ। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি, পদযাত্রা করেছি, রোডমার্চ করছি। জনগণকে নিয়ে মাঠে আছি। কথা পরিষ্কার-শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা আব্দুল্লাহপুরে এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি টিম এসেছিল যে দেশে নির্বাচনের ব্যবস্থা কেমন, তা দেখতে। তারা বসেছিল দেশের রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তারা বলেছিল, দেশে গিয়ে বলব-এ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক টিম পাঠাব কি না। তারা কী বলেছে? তারা বলেছে-বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই।
তাই তারা পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে না। এ কথা বিশ্বের সবাই জানে, এমনকি জাতীয় পার্টি বলেছে, যদি সরকার পদত্যাগ না করে, তবে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার দেশের মানুষকে শোষণ করতে করতে লুটপাট করে ফোকলা দেশে পরিণত করেছে। লুট করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে, বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছে। আপনারা দেখুন, বিচারব্যবস্থা কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। আজ যাদের স্বাভাবিকভাবে জামিন পাওয়া দরকার তারা পাচ্ছে না। ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৭১৯ জনকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। আজকে নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা আমান উল্লাহ আমানকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তিনি ১৯৮১ সালে স্বামীকে হারিয়েছেন। ১৯৭১ সালে যিনি তার দুই সন্তান আরাফাত রহমান ও তারেক রহমানকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে বন্দি করেছিল। তিনি ৯ মাস সংগ্রাম করেছেন। আজ এই দেশের সবচেয়ে অত্যাচারিত ও বঞ্চিত নারী হলেন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, সরকার জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাইরে বের হয়ে এলে তার বাঁশির সুরে সব মানুষ বেরিয়ে আসবে। তাই তাকে আটকে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই সরকার। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, যদি দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা না হয়, তাকে যদি সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয়, যদি তার কিছু হয়, তবে এই হাসিনার সরকার দায়ী থাকবে।
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের মা-বোনেরা জেগেছে, তারা এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দয়া করে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন দিন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।
এএ