স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোনো দেশের ভিসানীতি তাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং আমাদের এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে তা আমাদের ব্যাপার।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাভার গলফ ক্লাবে জাহাঙ্গীরনগর মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস্ অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ‘জাহাঙ্গীরনগর ছায়া জাতিসংঘ-২০২৩’ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে এদিন জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন মন্ত্রী। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ‘স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করছে’- শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নানা স্তরে জনগণের নানা ধরনের সেবাপ্রাপ্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এই সেবাপ্রাপ্তি জনগণের অধিকার। সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে কখনো কখনো জনগণ নানা রকম ভোগান্তির শিকার হন। আমরা বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়নের কথা শুনি, কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের যথোপযুক্ত জবাবদিহিতার আওতায় আনা গেলে নাগরিকদের সেবাপ্রাপ্তি সহজ ও ভোগন্তিমুক্ত হয়।
তাজুল বলেন, একসময় পৃথিবীতে নানা রকমের শাসনব্যবস্থা ছিল। কখনো রাজ ব্যবস্থা, কখনো জমিদার ব্যবস্থা কিংবা জোর করে দখলদারত্বের মাধ্যমে পৃথিবী শাসিত হয়েছে। তবে বিভিন্ন শাসনব্যবস্থা পার হয়ে আধুনিক বিশ্বে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ রায় দিয়েছে, কারণ শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেকোনো দেশ ও জাতির উন্নয়ন দ্রুততর হয়।
ছায়া সংসদের সরকারি দল ও বিরোধীদলের বিতার্কিকদের যুক্তি তর্ক অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শুনে মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে এখানে নানা মত ও পথের মানুষ থাকবে। যুক্তির জয়ের মাধ্যমেই গণতন্ত্র তার পথ খুঁজে নেয়।
তিনি উভয়পক্ষের বিতার্কিকদের সুন্দর যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ ধরনের চমৎকার একটি বিতর্কের পরিবেশে উপস্থিত হতে পেরে আমার নিজেরও খুব ভালো লেগেছে। আমি মনে করি উপস্থিত এই শিক্ষার্থীরাই একদিন যুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এসময় সাংবাদিকরা জানাতে চান আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে পর্দার আড়ালে কোনো রাজনৈতিক সংলাপ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। জবাবে মন্ত্রী বলেন, যেকোনো আলোচনায় একটি বিষয়বস্তু বা ট্রামস অফ রেফারেন্স নির্দিষ্ট করতে হয়। বাংলাদেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ভুলে যায়নি। সঠিক বিষয়বস্তু ঠিক করা গেলে তা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
বিকেলে সাভার গলফ ক্লাবে ‘জাহাঙ্গীরনগর ছায়া জাতিসংঘ-২০২৩’ সম্মেলনে মন্ত্রী টেকসই পৃথিবীর জন্য সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী এসময় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ছায়া জাতিসংঘ মডেলে সম্মেলনের প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে।
সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের মার্কির ভিসানীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। আমাদের নির্বাচন পদ্ধতি আমাদের সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। কোনো দেশের ভিসানীতি তাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং আমাদের এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে তা আমাদের ব্যাপার।
এসময় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সিটি করপোরেশনের মশক নিধন অভিযানের পাশাপাশি সবার অংশগ্রহণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদারকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এএ