মিউচুয়াল ফান্ডের আয়ের প্রধান উৎস পুঁজিবাজার। কিন্তু সেই পুঁজিবাজার মন্দার মধ্যে রয়েছে। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি ব্লু-চিপস কোম্পানির সূচকও কমেছে। এছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ প্রদানও কমেছে। এতসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ড খাত সর্বশেষ অর্থবছরের ব্যবসায় ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ) আয়োজিত রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে ‘রোল অব এসডিজি অ্যানালিটিক্স ইন ক্যাপিটাল মার্কেট-বেজড ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্সিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন আরেক কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এএএমসিএমএফ এর সভাপতি ড. হাসান ইমাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের কোঅর্ডিনেটর অ্যান্ড ইকোনোমিস্ট জুবায়ের হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়নে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে শেয়ারবাজারে এই খাতের অংশগ্রহণ খুবই কম। যেটা ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো। কিন্তু এটা হওয়া উচিত ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে আগামী ১০ বছরে এই খাত অনেক এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া হিসাব মান পরিপালনে কঠোর কমিশন। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা হবে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নিরসন করে। যা ব্যক্তিগতভাবে করা কঠিন। এজন্য বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।
রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এএএমসিএমএফ এর সভপাতি ড. হাসান ইমাম বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। এই খাতটি অনেক বাঁধা বা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ভালো করছে। শেয়ারবাজার যেখানে নেতিবাচক, সেখানে এই খাতের উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক ছিল। যেই ব্লু চিপস কোম্পানিতে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়, সেই ব্লু চিপস-৩০ সূচকও নেতিবাচক ছিল। এই অবস্থার মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ২৮৩ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এমনকি গত ১০ বছরের মধ্যে ৭ বছরই সূচক বৃদ্ধির তুলনায় মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করেছে।
মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কম নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেন উল্লেখ করে হাসান ইমাম বলেন, এই যে কোনো কোনো ইউনিটের দর ৪-৫ টাকা, এটা কিন্তু অ্যাসেট ম্যানেজারদের পারফরমেন্স না। আপনাকে দেখতে হবে ওই ইউনিটের অ্যাসেট কত আছে। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশে সম্পদের তুলনায় অনেক কমে বা ডিসকাউন্টে ইউনিট লেনদেন হয়। যেটা আমেরিকায় সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, বন্ডের কুপন রেট থেকে কর অব্যাহতি দেওয়া দরকার। তাহলে ইউনিটহোল্ডাররা ভালো লভ্যাংশ পাবে।
এলআর গ্লোবালের সিআইও রিয়াজ ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়েছে, সেভাবে শেয়ারবাজার এগোয়নি। এটা শেয়ারবাজারের জন্য খারাপ খবর। এটা সমাধান করা সম্ভব। যার অনেক সুযোগ রয়েছে।
এএ