কনওয়ে-রাচিনের বীরত্বে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিলো নিউজিল্যান্ড
স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশ: ২০২৩-১০-০৫ ২১:৩৪:৪৭
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র’র জোড়া সেঞ্চুরিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে জো রুটের ৭৭ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তুলে ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইল ইয়াং সাজঘরে ফিরলেও ইংলিশ বোলারদের উপর রীতিমতো ঝড় তুলে নিউজিল্যান্ডের দুই ব্যাটার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। এই দুই বাঁহাতি ব্যাটারের অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটিতে ৮২ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় কিউইরা।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের দেয়া ২৮৩ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। স্যাম কারানের লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হয়ে গোল্ডেন ডাকে সাজঘরে ফেরেন উইল ইয়াং। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা।
ক্রিজে আসেন তরুণ অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র। এরপর নিউজিল্যান্ডকে আর কোনো বেগ পেতে দেননি কনওয়ে ও রাচিন। দু’জনের অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ড জয় পেয়েছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। আদিল রশিদকে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে চার মেরে মাত্র ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন কনওয়ে।
পরের ৫০ রান পেতে তিনি খরচা করেছেন ৫০ বল। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ১২১ বলে ১৫২ রান করে। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া রাচিন ৮২ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরির স্বাদ পান। ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৯৬ বলে ১২৩ রান করে।
এর আগে, টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ছক্কা মেরে রানের খাতা খুলেন ইংলিশ ওপেনার বেয়ারস্টো। বোল্টের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফাইন লেগের উপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন তিনি। একপ্রান্তে বেয়ারস্টো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও, অন্যপ্রান্তে কিউই বোলারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন আরেক ওপেনার মালান। নিজের প্রথম ওভার থেকেই বাঁহাতি এ ব্যাটারের বিপক্ষে দারুণ বল করেন ম্যান হেনরি। যার সুফল হিসেবে পান মেইডেন ওভার।
মালানকে ফিরিয়ে কিউইদের প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন ম্যাট হেনরি। এই কিউই পেসারের গুড লেন্থের বল মালানের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক টম লাথামের হাতে ধরা পরে। ইংলিশ ওপেনার প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে করেন ২৪ রান। এরপর উইকেটে এসে বেয়ারস্টোকে সঙ্গ দেন জো রুট।
ইনিংসের ১৩ তম ওভারের পঞ্চম বলে কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বলে উরিয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার ডেরিল মিচেলের হাতে তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন বেয়ারস্টো। ইংলিশ ওপেনার প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৩৫ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ রান করেন।
এরপর ক্রিজে আসেন হ্যারি ব্রুক। ভালো শুরুর আভাস দিয়ে ব্রুকও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংসের ১৭তম ওভারে বল হাতে আসেন রাচিন রবীন্দ্র। এই ওভারে দু’টি চার এবং একটি ছক্কা মারার পরের বলেই আবার বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন ব্রুক। ১৬ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ২৫ রান করেন তরুণ এ ইংলিশ ব্যাটার। ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলী। গ্লেন ফিলিপসের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন ১১ রান করা মঈন। ১১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পরে ইংলিশরা।
এরপর অধিনায়ক জস বাটলারকে সঙ্গী করে চাপ সামাল দেন জো রুট। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭০ রান যোগ করেন। এর মাঝে ৫৭ বলে জো রুট স্পর্শ করেন তার ক্যারিয়ারের ৩৭তম হাফ-সেঞ্চুরি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন বাটলার। এই ইংলিশ অধিনায়কও অল্পের জন্য ফিফটি মিস করেন। ম্যাট হেনরির গুড লেন্থের বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক টম লাথামের হাতে ধরা পড়েন বাটলার। এ ইংলিশ অধিনায়ক প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৪২ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ রান করেন।
এরপর একে একে লিয়াম লিভিংস্টোন ২২ বলে ২০ করে ফেরেন। তারপর রুট ৮৬ বলে ৭৭ রান করে ফিরলে বড় সংগ্রহের আশা ক্ষীণ হতে থাকে ইংলিশদের। শেষ দিকে স্যাম কারান ১৯ বলে ১৪, ক্রিস ওকস ১২ বলে ১১ আর আদিল রশিদ ১৩ বলে ১৫ রান করলে ইংল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮২ রানে থামে।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন ম্যাট হেনরি। এছাড়াও দু’টি করে উইকেট শিকার করেন মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস এবং একটি করে উইকেট পান ট্রেন্ট বোল্ট ও রাচিন রবীন্দ্র।
এএ