চাকরির ইন্টারভিউয়ে বসে যে কেবল প্রশ্নকর্তারাই প্রার্থীকে প্রশ্ন করবেন তা নয়। প্রার্থীরও সুযোগ আসে প্রশ্ন করার। এ সময়টা অবশ্যই অর্থপূর্ণ ও বুদ্ধিমানের মতো প্রশ্ন করা উচিত।
বিশেষজ্ঞের মতে, প্রশ্নকর্তাদের প্রতিও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া উচিত অন্তত ৩টি কারণে।
১. নতুন চাকরি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনার কিছু জানা প্রয়োজন।
২. আপনার প্রশ্ন তাদের বুঝিয়ে দেবে যে আপনি এ চাকরি নিয়ে বেশ সচেতন।
৩. এ প্রশ্নোত্তর পর্বটি ইন্টরভিউকে আরো বেশি অর্থপূর্ণ করে তুলবে।
যেকোনো ইন্টারভিউয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নই করা উচিত। আপনার প্রশ্নের মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে কর্তৃপক্ষ। আবার এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে তা জিজ্ঞাসা করলেই বিপদ।
কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবে, আপনি এই ইন্টারভিয়ের জন্যে প্রস্তুত নন। দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। যে চাকরির জন্যেই প্রার্থী হন না কেন, প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।
এখানে বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরেছেন এমনই ৫টি প্রশ্নের কথা।
১. এ প্রতিষ্ঠান কি কাজ করে?
প্রশ্নকর্তাদের এ প্রশ্ন প্রার্থী হয়ে আপনি করতে পারেন না। অনেক ভালো প্রার্থীরাও এমন প্রশ্ন করে ফেলেন। এ প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি বুঝিয়ে ফেললেন, চাকরির আবেদন করলেও প্রতিষ্ঠান বিষয়ে আপনার কোনো হোমওয়ার্ক নেই। এমন প্রশ্ন সরাসরি না করে বরং সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন করুন। কৌশলী প্রশ্নের মাধ্যমে তাদের কাজ সম্পর্কে ধারণা নিন।
২. প্রার্থীর মধ্যে আপনারা কি দেখতে চান?
প্রার্থীর মাঝে প্রতিষ্ঠান কি কি গুণের সমন্বয় দেখতে চায়? এ প্রশ্নটা অনেক বিনয়ী এবং অর্থপূর্ণ। তা ছাড়া এ ধরনের প্রশ্ন যেকোনো প্রশ্নকর্তাকে হতাশ করে দিতে পারে। আপনি এখানে চাকরির আশায় এসেছেন। কাজেই এ সম্পর্কে আপনার সম্যক ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন না করেও আলাপচারিতার মাধ্যমে ধারণা লাভ করা যায়।
যেমন- এসব কথা বলতে পারেন।
মনে হচ্ছে আপনারা এমন কিছু কাজের প্রয়োজনে প্রার্থী চাইছেন যে কিনা তা সম্পন্ন করতে সহায়তা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের কাজ সম্পর্কে একটু ধারণা চাই।
দয়া করে একটু ধারণা দেবেন যে, আপনার বিভাগককে সফল করতে একজন প্রার্থী কি ধরনের সহায়তা করতে পারেন?
যে কাজে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না, সেখানে প্রার্থীর করণীয় কি হতে পারে?
৩. এ দায়িত্বে চাকরি না হলে, অন্য কোনো বিভাগে কি সুযোগ আছে?
কিছু প্রার্থী এমন চট করে এমন বোকার মতো প্রশ্ন করে ফেলেন। এর মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থাতেই সব আশা-ভরসা বাদ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ বুঝে নেয়, আপনার মধ্যে দায়িত্ব নেওয়ার মতো বুদ্ধিমত্তা নেই। যদি ইন্টারভিউয়ে শেষ পর্যন্ত এ চাকরি না হয়, তবে এইচআর ম্যানেজারকে এ প্রশ্ন করা যেতে পারে। কিন্তু তা ইন্টারভিউয়ের বসে নয়।
৪. আর কতজন প্রার্থীর ইন্টারভিউ আপনারা নিতে চলেছেন?
এ বিষয়ে আপনার মাথাব্যথা থাকা উচিত নয়। প্রশ্নকর্তারা বুঝে ফেলবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস নেই। যদি তা থাকে, তবে এ প্রশ্ন করতেই পারেন। আসুক না হাজার হাজার প্রার্থী। যোগ্য হলে আপনিই সামনে থাকবেন। তা ছাড়া প্রতিযোগিতার বিষয়ে আপনার মাঝে ভয় থাকা উচিত নয়। তাই অন্যদের কথা ভুলে কেবলমাত্র নিজের বিষয়ে কতা বলুন।
৫. অন্য প্রার্থীরা যদি আরো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়ে থাকেন, তবে আমি কি সুযোগ পাবো না?
এটা পুরোপুরি কর্তৃপক্ষের বিষয়। সুযোগ সবার জন্যেই সমান। আপনি যদি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেন, তবে তারা আপনাকেই বেছে নেবে, এটা স্বাভাবিক। তা ছাড়া অভিজ্ঞতা আপনারও কিছু রয়েছে। আবার চাকরির অভিজ্ঞতা না থাকলেও কোনো সমস্যা নয়। প্রতিষ্ঠান কি ধরনের গুণাগুণ দেখে প্রার্থী বাছাই করবেন তার সম্পর্কে প্রশ্ন করতে নেই।
সানবিডি/ঢাকা/আহো