আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় হার দেখতে হয়েছে টাইগার বাহিনীর। বলা চলে, ইংলিশ পরীক্ষায় ভরাডুবি হয়েছে সাকিব আল হাসানদের।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ধর্মশালা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের সপ্তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায়। ইংলিশরা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান করে। জবাবে ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রান তুলতেই শেষ হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস। তাতে ১৩৭ রানে জয় পায় ইংল্যান্ড।
ম্যাচটিতে শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হয় ইংলিশ দুই ওপেনার মালান এবং বেয়ারস্টো। এই দুইজনের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ১১৫ রান। এরপরে বেয়ারস্টো আউট হলেও দমে যায়নি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। রুটকে নিয়ে বড় এক জুটি গড়েন মালান।
শরিফুল, সাকিব, মুস্তাফিজদের তুলোধুনো করে মালান তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক তুলে নেন। এরপরও এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে শেষ পর্যন্ত শেখ মেহেদীর বলে বোল্ড হয়ে ১৪০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মালান। মালান, বেয়ারস্টো ছাড়াও ফিফটির দেখা পেয়েছেন জো রুট। ৬৮ বলে ৮ চার এবং এক ছক্কার মারে ৮২ রান করেছেন রুট।
এরপর অবশ্য ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটার ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। শরিফুল ও শেখ মেহেদীর বলে একে একে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ব্রুক, লিভিংস্টোন এবং কারান। শেষ পর্যন্ত আদিল রশিদ এবং ক্রিস ওকসের ঝোড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে ৩৬৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড।
৩৬৫ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে লিটন দাস ভালো শুরু এনে দেন। কিন্তু পরের ওভারেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। রিস টপলির বল ঠিকমতো ব্যাটে নিতে না পারায় স্লিপে ক্যাচ উঠে যায় এবং সেই সুযোগ লুফে নেন জনি রেয়ারেস্টো।
তামিম আউট হওয়ার পরের বলেই পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এ দিন রানের খাতা খুলতেই পারেননি তিনি। দ্বিতীয় ওভারে টানা দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপরে উইকেটে এসে টপলিকে হ্যাটট্রিকের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। কিন্তু তিনিও ১ রানের বেশি করতে পারেননি। টপলির করা ৫.৪ ওভারে সাকিব ফিরেছেন সরাসরি বোল্ড হয়ে।
বাংলাদেশি ৩ ব্যাটসম্যানকে টপলি তুলে নেয়ার পরে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ওকস। তিনি ফেরান মিরাজকে। ৭ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরে লিটনকে সঙ্গ দিতে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম। লিটন-মুশফিক ৭৫ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন। এরপরে ক্রিস ওকসের অফ কাটারের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন লিটন। তিনি ৬৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
তখনও বাংলাদেশের জয়ের আশা ছিল। কিন্তু দলীয় ১৬৪ রানে মুশফিক আউট হলে সে আশা ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে। বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক ফিরেছেন টপলির বলেই। ডিপ থার্ডে থাকা আদিল রশিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৬৪ বলে ৫১ রান করেছেন তিনি। মুশফিকের পরে তাওহীদ হৃদয় (৬১ বলে ৩৯ রান) ও শেখ মেহেদী (৩২ বলে ১৪ রান) আউট হলে জয়ের সম্ভাবনা প্রায়ই কমে আসে। শেষ দিকে তাসকিন, শরিফুল এবং মুস্তাফিজরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও কাজের কাজ হয়নি।
এএ